নিজের শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করতে গিয়েছিলেন ডায়ানা ক্যুপার। ছ’ঘণ্টা পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো তাঁকে। কাকতালীয়? কোনো ক্লু নেই পুলিশের কাছে। আর তাই ডেকে আনা হলো ড্যানিয়েল হোথর্নকে। হোথর্ন... মেধাবী কিন্তু পাগলাটে একজন ডিটেক্টিভ ইন্সপেক্টর, বহিষ্কৃত হয়েছে পুলিশ ফোর্স থেকে। কেস সমাধান করার আগেই সে গিয়ে হাজির হলো স্বনামধন্য লেখক অ্যান্টনি হরোউইটযের কাছে। ‘আমাকে নিয়ে বই লিখবেন একটা?’ ইচ্ছা না-থাকার পরও না বলতে পারলেন না হরোউইটয। তাঁরা দু’জনে ছুটে বেড়াতে লাগলেন লন্ডনের এমাথা থেকে ওমাথায়। কিন্তু খুনি যেমন ধূর্ত তেমনই সতর্ক। আড়ালে থেকে চোখ রেখেছিল সে পুরো পরিস্থিতির উপর। তাই সুযোগ পাওয়ামাত্র মরণফাঁদে আটকে ফেলল সে হরোউইটযকে।
প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির এক সন্ধ্যায় তিন বন্ধু আবিষ্কার করলো, ওদের প্রতিদিনের পরিচিত জায়গাটা এমনভাবে রূপান্তরিত হয়ে গেছে যে দেখে মনে হচ্ছে এই স্থানে আগে কখনোই আসেনি ওরা। যে রাস্তা ধরে প্রতিদিন যাওয়া-আসা করে তারা, সেটা কিছুদূর গিয়েই মিশে গেছে পাহাড়ি মাটির সাথে, আর তার ধারে দেখা দিয়েছে আকাশের বুক ছুঁয়ে দেয়া উঁচু গাছে ভরপুর রহস্যময় এক বনভূমি। বজ্রপাত আর ঝড়ের ক্রুদ্ধ গর্জন ওদের হাতে ঐ বনে প্রবেশ করা ছাড়া আর কোনো উপায় রাখেনি। খুব দ্রুতই ওরা বুঝতে পারলো, এটা কোনো স্বাভাবিক বন নয়। এ বন ভেতরে যাওয়ার উপায় রেখেছে, শুধু রাখেনি বেরোবার পথ। অদ্ভুত এ বন যেন পরিচিত জগতের বাইরে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক জগৎ, যে জগতে গাছেরা ভেঙে পড়ে শব্দহীন কান্নায়, যে জগৎ মানুষের মনের ভেতর উঁকি দিয়ে বের করে আনে তার সবচেয়ে কদাকার রূপকে, যেখানে ঘুরে বেড়ায় ভয়ংকর সব প্রাণী, শুধু পুরাণের বইতেই যাদের দেখা মেলে। সে জগতে মাকড়সার জালের ন্যায় ছেয়ে আছে কেবল দুটো অনুভূতি—একাকীত্ব ও বিষণ্ণতা। আর এই সবকিছুর উপরে আছে অন্যকিছু, একটা নাম। মাদার ন্যাচার।
কাহিনি সংক্ষেপঃ ভালো হয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর্টেমিস ফাউল, তবে শেষ এই দাঁওটা মারার পর! অন্তত তেমনটাই পরিকল্পনা করেছিল ক্রিমিনাল এই মাস্টারমাইণ্ড। ঘাপলা বাধল ফেয়ারি প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো সুপার কম্পিউটার, সি কিউব, বিক্রি করতে গিয়ে। নৃশংস ব্যবসায়ী জন স্পাইরো ওকে বোকা বানাল! আহত হতে হলো ওর দেহরক্ষী আর একমাত্র বন্ধু, বাটলারকে। লোকটাকে বাঁচাতে হলে চাই জাদু। আর তাই ছেলেটা শরণাপন্ন হলো ফেয়ারি হলি শর্টের। তবে শুধু জাদু হলেই হবে না, সেই সাথে সাহায্য লাগবে সৌভাগ্যের। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সৌভাগ্য আর্টেমিসের পক্ষে নেই!
গত একটা বছর কোমায় কাটিয়ে দিয়েছে ফেয়ারি জগতের শীর্ষ সন্ত্রাসী, ওপাল কোবোই! দুর্ঘটনার শিকার? উহু, এই কোমাটাও স্বপ্রনোদিত! সময়টা নষ্ট করেনি ওপাল, কাটিয়েছে পরিকল্পনা সাজিয়ে। কীসের পরিকল্পনা? ওর শত্রুদের বারোটা বাজানোর...আর কীসের! অথচ স্মৃতি মুছে ফেলার কারণে পাতালের কিচ্ছু মনে নেই আর্টেমিসের। তবে ওপাল ভোলেনি ওকে। ভোলেনি হলি শর্ট বা লেপ-এর ওরাও! আরও একবার...ফেয়ারি এবং মানব সভ্যতার রক্ষাকর্তা রূপে আবির্ভুত হতে হবে ওকে। কিন্তু এবারের প্রতিপক্ষে যে বড় শক্ত! কে জিতবে বুদ্ধির খেলায়? ওপাল কোবোই? নাকি আর্টেমিস?
লোকে বলে, আর্টেমিস ফাউল এই শতাব্দীর বড় বড় প্রত্যেকটা অপরাধের সাথে জড়িত! মাত্র বারো বছর বয়সেই, অপরাধ জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রে পরিণত হয়েছে সে। দুর্নীতি আর অপহরণকে পুঁজি করে বাড়িয়ে তুলতে চাচ্ছে পরিবারের ঐশ্বর্য। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, এক ফেয়ারিকে অপহরণ করতে চাইছে। পাতালপুরীতে বাস করে এমন একদল ভয়ঙ্কর আর প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে মানুষের চাইতে যোজন যোজন এগিয়ে থাকা ফেয়ারিদের খোঁজ পেয়েছে সে। কিন্তু তাদের ক্ষমতার প্রচণ্ডতা ঠিক ঠাহর করে উঠতে পারেনি। অপহরণ করলেই যে মিলবে না মুক্তিপণ ! তার জন্য ফেয়ারিদের মুহুর্মুহু আক্রমণ সহ্য করতে হবে! মানুষ আর ফেয়ারি, এই দুই সম্প্রদায়ের মাঝে রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধের সূচনা এই হলো বলে!