প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির এক সন্ধ্যায় তিন বন্ধু আবিষ্কার করলো, ওদের প্রতিদিনের পরিচিত জায়গাটা এমনভাবে রূপান্তরিত হয়ে গেছে যে দেখে মনে হচ্ছে এই স্থানে আগে কখনোই আসেনি ওরা। যে রাস্তা ধরে প্রতিদিন যাওয়া-আসা করে তারা, সেটা কিছুদূর গিয়েই মিশে গেছে পাহাড়ি মাটির সাথে, আর তার ধারে দেখা দিয়েছে আকাশের বুক ছুঁয়ে দেয়া উঁচু গাছে ভরপুর রহস্যময় এক বনভূমি। বজ্রপাত আর ঝড়ের ক্রুদ্ধ গর্জন ওদের হাতে ঐ বনে প্রবেশ করা ছাড়া আর কোনো উপায় রাখেনি। খুব দ্রুতই ওরা বুঝতে পারলো, এটা কোনো স্বাভাবিক বন নয়। এ বন ভেতরে যাওয়ার উপায় রেখেছে, শুধু রাখেনি বেরোবার পথ। অদ্ভুত এ বন যেন পরিচিত জগতের বাইরে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক জগৎ, যে জগতে গাছেরা ভেঙে পড়ে শব্দহীন কান্নায়, যে জগৎ মানুষের মনের ভেতর উঁকি দিয়ে বের করে আনে তার সবচেয়ে কদাকার রূপকে, যেখানে ঘুরে বেড়ায় ভয়ংকর সব প্রাণী, শুধু পুরাণের বইতেই যাদের দেখা মেলে। সে জগতে মাকড়সার জালের ন্যায় ছেয়ে আছে কেবল দুটো অনুভূতি—একাকীত্ব ও বিষণ্ণতা। আর এই সবকিছুর উপরে আছে অন্যকিছু, একটা নাম। মাদার ন্যাচার।