শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য রেখে অধ্যয়নের বিষয় নির্বাচন করে থাকেন। অনেকেই বেছে নেন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা ব্যবসায় প্রশাসন। একটা সফল ব্যবসা গড়ে তুলতে অথবা ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে এ বিষয়টি বেছে নেন তারা। বর্তমান বিশ্বে চাকরির ক্ষেত্রটি অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ। ব্যবসায় প্রশাসনে অধ্যয়ন করে ভাল ফলাফল অর্জন করতে পারলে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি- এমন ধারণা অনেকেরই। সুতরাং ক্যারিয়ার গড়ার ভাবনায় বিবিএ/এমবিএ ডিগ্রি অর্জনের প্রবণতা দেখা যায়। এজন্য ব্যয় করতে হয় কাড়িকাড়ি টাকা। যুক্তরাষ্ট্রের মত উন্নত দেশেও এমবিএ প্রোগ্রামের বার্ষিক খরচ (২০১১ সালের হিসাবে) ৪০ হাজার ৯৮৩ থেকে ৫৩ হাজার ২০৮ ইউএস ডলার। এটা শুধু টুইশন ফি। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ তো আছেই। কিন্তু বিপুল অর্থ ব্যয় করে শেষ ফলাফলটা কী দাঁড়ায়? আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী ক্যারিয়ার বেছে নিতে পারেন না সবাই। জশ কাউফম্যানের ‘দ্য পার্সোনাল এমবিএ’ বইটিতে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ে সফলতা কিংবা পেশায় উন্নতির জন্য অবশ্যই এমবিএ অধ্যয়ন করবেন, কিন্তু সেজন্য বিজনেস স্কুলে ভর্তি হওয়া আবশ্যক এমন ধারণা ঠিক নয়।
বডি ল্যাংগুয়েজ - হাউ টু রিড আদারস থটস বাই দেয়ার জেসচারস, সেলসম্যান, সেলস ম্যানেজার ও এক্সিকিউটিভদের ওয়ার্কিং ম্যনুয়েল: মানুষের মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম হল ভাষা। কিন্তু ভাবতেও অবাক লাগে যে মাত্র ৩৫ ভাগ ভাব আমরা ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করি। প্রশ্ন জাগে, বাকী ৬৫ ভাগ তবে কোথায় যায়, কি ঘটে এর ভাগ্যে? এই অজানা তথ্যের রহস্য উদ্ধার করতে হলে আপনাকে পড়তে হবে এলান পীসের ‘বডি ল্যাংগুয়েজ’। প্রতিদিন আমরা নানা ধরণের মানুষের মুখোমুখি হই। তাদের বিভিন্ন ধরণের অঙ্গভঙ্গি দেখে আমরা অভ্যস্থ। কিন্তু কখনো কি মনে হয়েছে যে এই ভঙ্গিগুলো আমাদের অনেক কিছু জানাতে চায়? মানুষের নানা ভঙ্গিমার এইসব ভাষাকে অত্যন্ত সরল ভাষায় উপস্থাপন করেছেন এলান পীস। তাঁর বই পড়লে কেবল অন্যের মনের ভাবই পড়া যাবে না, সেইসাথে সত্য ও মিথ্যার প্রকৃতি নির্ধারণ, মানুষের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা ও নিজেকে অন্যের সামনে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য যোগ্য করাও সম্ভব। মানুষের বাহ্যিক আচরণ দেখে অনেক সময় তার অন্তর্নিহিত চিন্তাধারাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। মানুষ সৌজন্যের খাতিরে তার রাগ, অসন্তোষ বা বিরক্তি সরাসরি প্রকাশ করে না। এই বই পড়লে নিশ্চিতভাবে আপনি সেই অব্যক্ত অনুভূতির গভীরে পৌঁছে যাবেন। প্রতিকূল পরিবেশে সিদ্ধান্তহীন মানুষ দ্বিধার সংশয়ে দোলতে থাকে। ‘বডি ল্যাংগুয়েজ’ আপনাকে তার মর্মোদ্ধার করতে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, প্রিয়জনের কোন গোপন বাসনা সকলের অলক্ষ্যে টের পেতে চান? কিংবা জানাতে চান কোন রোমান্টিক রঙিন ইঙ্গিত? তাহলে ‘বডি ল্যাংগুয়েজ’ হবে আপনার সেই গোপন বার্তাবাহক। প্রেমে বা বিরহে, চাকরি বা ব্যবসায় বিচিত্র মানুষের নানা ভঙ্গিমার অন্তর্নিহিত অর্থই হল ‘বডি ল্যাংগুয়েজ’ বইয়ের সারতথ্য। পৃথিবীর যে কোন পেশার মানুষ জীবনের সবচেয়ে জটিল ঘটনাবলীকে বুঝার জন্য এই বইটি নির্দ্বিধায় ব্যবহার করতে পারবে। কাজেই বইটি পড়–ন আর সহজ ও মসৃণ করে তুলুন আপনার চলার পথ।
মাইন্ড হ্যাকিং - হাউ টু চেঞ্জ ইয়োর মাইন্ড ইন 21 ডেইজ: আপনি কি কখনো ভেবেছেন কম্পিউটারের মতই আপনার ব্রেইনকে রিপ্রোগ্রামড করা সম্ভব? এমন কাজ আসলে একজন হ্যাকার করে থাকে। যদি বিষয়টি জেনে না থাকেন, তাহলে 'মাইন্ড হ্যাকিং' বইটি আপনার জন্য। তিনটি ভিন্ন স্টেপে নিজের মনকে পরিপূর্ণভাবে গুছিয়ে নেবার বৃত্তান্ত বর্ণনা করা হয়েছে বইটিতে। কম্পিউটারেরই বিভিন্ন টার্মের মত শব্দ ব্যবহার সকল বিষয় সম্পর্কে লেখা হয়েছে। এজন্য বইটি বেশ ইন্টারেস্টিং। বিশেষ করে, প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করা ব্যক্তিদের কাছে বইটি অনেক ভালো লাগবে। গতানুগতিক সেল্ফ হেল্প বইয়ের চেয়ে আলাদা স্বাদ দেবে 'মাইন্ড হ্যাকিং'। বইটিতে বর্ণিত একুশ দিনে মানসিক অবস্থা উন্নয়নের তিনটি কার্যকরী পদ্ধতি আপনাকে সাহায্য করবে মনকে সুশৃঙ্খল করে সাজানোর জন্য। মাইন্ড হ্যাকিং বইটির লেখক উদ্যোক্তা এবং কমেডিয়ান স্যার জন হারগ্রেভ। তিনি এই বইয়ে মানসিক অবস্থাকে উন্নতকরণের নানা উপায় বর্ণনা করেছেন। লেখক নিজেও একসময় দুশ্চিন্তা, হতাশা এবং জটিল মেন্টাপ সেটাপ নিয়ে ভুগছিলেন। সেখান থেকে তিনি নিজেকে মুক্ত করে আনেন। নিজেকে শুদ্ধতার পথে নিয়ে আসার পুরো অভিজ্ঞতাই তিনি তার বইয়ে বর্ণনা করেছেন। সেইসাথে তার নিজের উদ্ভাবিত বেশকিছু পদ্ধতি পাঠকের জন্য লিখেছেন তিনি। সবশেষে বলতে চাই, মাইন্ড হ্যাকিং বইটি সবার জন্যই সুপাঠ্য। মাইন্ড হ্যাকিং পড়ার মধ্যে দিয়ে নিজের মস্তিষ্ককে সুশৃঙ্খল করে সাজাতে পারেন আপনি। মানসিকতাকে ইতিবাচক রাখার বেশকিছু পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে নিজেকে করতে পারেন সমৃদ্ধ। তাই বইটি পড়ুন। নিজেকে সমৃদ্ধ করুন। আপনার জীবনের সকল ক্ষেত্রে নিজেকে জেতানোর লক্ষ্যে এগিয়ে যান আরও একধাপ।
মাইন্ডসেট - চেঞ্জিং দ্য ওয়ে ইউ থিংক টু ফুলফিল ইয়োর পটেনশিয়াল: ক্যারল ডিউইক ব্যক্তিত্ব, সামাজিক মনোবিজ্ঞান ও উন্নয়নমুখী মনোবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত একজন গবেষক । তিনি কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে সাইকোলজির উইলিয়াম বি. রেন্সকোর্ট প্রফেসর ছিলেন এবং বর্তমানে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে সাইকোলজির লিউস ও ভার্জিনিয়া ইটন প্রফেসর এবং আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস এন্ড সায়েন্স’ এর সদস্য হিসেবে আছেন। তাঁর “সেলফ-থিয়োরিস, দেয়ার রোল ইন মটিভেশন, পার্সোনালিটি এন্ড ডেভেলপমেন্ট” বইটি ওয়ার্ল্ড এডুকেশন ফেলোশীপ কর্তৃক ‘বুক অব দ্য ইয়ার’ এর সম্মান লাভ করেছে । নিউ ইয়র্কার, টাইম, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোষ্ট ও বোষ্টন গোবে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার পালো এলটো’তে স্বামীর সাথে বাস করেন । প্রচ্ছদ : অমর্ত্য আতিক
রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড - ধনীরা তাদের সন্তানদের টাকা পয়সার ব্যাপারে কি শেখায়, যা গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী শেখায় না: প্রয়োজনীয়তা স্কুল কি বাস্তব দুনিয়ার জন্য ছেলেমেয়েদের তৈরি করে? আমার বাবা-মা বলতেন, “পড়াশুনা কর, ভালো গ্রেড পাও, দেখবে তুমি অনেক বড় চাকরি পাবে।” তাদের। জীবনের লক্ষ্য ছিল আমাকে ও আমার বড় বোনকে কলেজে পাঠাননা, যাতে জীবনে সফল হওয়ার সবচেয়ে বেশি সুযোগ পাই। ১৯৭৬ এ আমি যখন ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে একাউটিং এ সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে অনার্স গ্রাজুয়েট হলাম, আমার বাবা-মা তাদের লক্ষ্যে পৌছে গেলেন। তাঁদের জীবনের চূড়ান্ত আনন্দের ছিল এই অর্জন। বিগ এইট’ নামক এক একাউন্টিং ফার্মে আমি যোগ দিলাম এবং ক্যারিয়ার গড়লাম ও দ্রুত রিটায়ার করলাম। আমার স্বামী মাইকেল খুব সহজ পথ বেছে নিয়েছিলেন। আমরা দুজনই ভদ্র অর্থে পরিশ্রমী পরিবারের সন্তান, কিন্তু কাজের ব্যাপারে নীতিগতভাবে আমরণ সিরিয়াস, মাইকেলও অনার্স গ্রাজুয়েট ছিল, প্রথমবার সে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ও দ্বিতীয়বার ল’ স্কুল থেকে ডিগ্রি নিয়েছে। ওয়াশিংটন ডি.সি ল ফার্মে সে যুক্ত হয়ে গেল, ফলে তার পেশা ও ভবিষ্যত উজ্জ্বল ছিল ও দ্রুত রিটায়ার মেটের নিশ্চয়তাও ছিল। যদিও আমাদের ক্যারিয়ার সফল ছিল, কিন্তু সবকিছু আশানুরূপ হলো না, নানা কারণে আমাদের দুজনকেই পদ বদলাতে হয়েছে আর আমাদের জন্য কোন পেনসনের ব্যবস্থা ছিল না। ব্যক্তিগত অবদানই রিটায়ারমেন্ট ফান্ডের পুঁজি হয়ে রইল। তিন সন্তান নিয়ে আমার ও মাইকেলের সুখী সংসার। এই লেখা যখন লিখছি, তখন আমার দুই সন্তান কলেজে ও অন্যজন হাই স্কুলে পড়ছে। বাচ্চারা যাতে সর্বোত্তম শিক্ষা পায়, সে ব্যাপারে আমরা খুব সচেতন ছিলাম। ১৯৯৬’এর একদিন আমার এক সন্তান খুব বিরক্তি নিয়ে স্কুল থেকে ফিরল। সে পড়াশুনার বিষয়ে খুব ক্লান্ত ও একঘেয়ে হয়ে উঠল। সে জানতে চাইল, “কেন আমি ঐসব বিষয় পড়ে সময় নষ্ট করছি যেগুলো আমার জীবনে কোন কাজে আসবে না?” কিছু না ভেবেই আমি বললাম, “কারণ তুমি ভাল গ্রেড না পেলে কলেজে যেতে পারবে না।” সে জবাব দিল, “কলেজে না গেলেও আমি ধনী হতে পারব।” কিছুটা ভয়ার্ত স্বরে আমি বললাম, “কলেজে না গেলে তুমি ভালো চাকরি পাবে না।
লাইফ উইদাউট লিমিটস - হাস্যকরভাবে ভালো একটি জীবনের অনুপ্রেরণা: হাত-পা ছাড়া জন্ম নেওয়া নিক একটি স্বাধীন, স্বাবলম্বী, পরিপূর্ণ ও "হাস্যকরভাবে ভালো" জীবন গঠনের জন্য তার অক্ষমতাকে জয় করেছেন। একই সাথে প্রকৃত সুখের সন্ধানকারী প্রতিটি ব্যক্তির জন্য রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমানে একজন আন্তর্জাতিকভাবে সফল মটিভেশনাল ¯িপকার হয়ে উঠে, নিক উৎসাহের সাথে প্রচার করেন তার জীবনের মূল বার্তাটিকে: সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো, জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে বের করা এবং চলার পথে অসম্ভব মনে হওয়া প্রতিবন্ধকতা এলেও হার না মানা। এই বইটিতে নিক তার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনে শারীরিক অক্ষমতা ও মানসিক যুদ্ধের সম্মুখীন হওয়া এবং সেগুলোর সাথে লড়াই করার গল্পটি ব্যক্ত করেছেন। "একটা দীর্ঘ সময় ধরে, আমি নিজেকে একাকীত্বে মুড়িয়ে নিয়ে শুধু এটাই কল্পনা করেছি, এই পৃথিবীতে আদৌ আমার মতো কেউ আছে কীনা এবং আমার জীবনে কষ্ট ও লাঞ্ছনা ছাড়া আর কোনো উদ্দেশ্য আছে কীনা।" নিক বলেছেন যে, কীভাবে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রাখাটা তার শক্তির মূল উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও, তিনি বর্ণনা করেছেন যে, একবার যখন তিনি জীবনের উদ্দেশ্য- মানুষকে আরও ভালো জীবন গঠনের জন্য অনুপ্রাণিত করা- স¤পর্কে ধারণা লাভ করলেন, তখন তিনি সীমাবদ্ধতাহীন, পুরস্কৃত ও উৎপাদনক্ষম জীবন গঠনের জন্য আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেলেন। আপনিও যাতে একটি সীমাবদ্ধতাহীন জীবন গড়ে তুলতে পারেন, সেজন্য নিকের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করুন।