নিউ অর্লিন্স এয়ারপোর্টে পৌঁছে রানা জানল, কাছেই ছোট্ট এক শহরে বাঁশি বাজাবেন দুনিয়া-সেরা বংশীবাদক পন্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়া। তখনই স্থির করে ফেলল ও, থেকে যাবে আর দুটো দিন, কিংবদন্তি মানুষটির বাঁশি শুনে তারপর ফিরবে দেশে। জানত না, সিদ্ধান্তটা ছিল কতবড় ভুল। জড়িয়ে পড়ল ও ভয়ঙ্কর এক বিপদে! গেস্টহাউসে উঠে যে হাসিখুশি কৃষ্ণাঙ্গিনী মহিলাকে বড়বোনের মত লেগেছিল, তারই খুনের দায়ে ফেঁসে গিয়ে পালাচ্ছে এখন রানা। কিন্তু পালিয়ে যাবে কোথায়? শুরু হয়েছে লুইযিয়ানার সবচেয়ে বড় ম্যান-হাণ্ট! একদিকে রক্তলিপ্সু কিছু লোক ও শত শত পুলিশ, অন্যদিকে রানা একা! যারা চরম অন্যায় করল লিযের ওপর, তাদেরকে ছেড়ে দেবে রানা? শুরু হয়েছে ওর প্রাণান্ত সংগ্রাম! শপথ নিয়েছে: প্রাণ থাকতে ছাড়বে না ওই বর্ণবাদী খুনি জানোয়ারগুলোকে!
কে ওই অপরূপা? চোখ সরাতে পারল না রানা। জানল, মেয়েটা ওর মৃত সহযোগী মাইকের বোন। অনুরোধ করল জুডি, খুঁজে দিতে হবে ওর বড় বোনকে। বিসিআই চিফও বললেন, মেয়েটাকে সাহায্য করা তোমার দায়িত্বের পর্যায়ে পড়ে। কিন্তু দুর্গম, নিষ্ঠুর পশ্চিমের লিটল ফোর্কে পা দিয়েই জড়িয়ে গেল রানা মস্ত ঝামেলায়। কেবলই বাড়ল লাশের ভিড়। শত্রু ভয়ঙ্কর। জোর করে তুলে নিয়ে গেল অসহায় জুডিকে। ওকে উদ্ধার করতে সুদূর এক র্যাঞ্চে হাজির হলো রানা। জানে, ওর জন্যে অপেক্ষা করছে একদল রক্তলোলুপ খুনি! সত্যি বলতে, সব বুঝেও মৃত্যুর মুখে ঝাঁপ দিল রানা। কে জানে বাঁচে কি না!
বিসিআই নির্দেশ দিলঃ রানা, আত্মগোপন করো! তোমাকে খুন করতে আসছে এমআই-সিক্সের একদল দুর্ধর্ষ এজেন্ট! সত্যিই ইতালিতে এসে হাজির হলো তারা। তাদের ক’জনকে খতম করে পালিয়ে গেল ও ফ্রান্সের দুর্গম এক পাহাড়ি অঞ্চলে। আশ্রয় পেল সরল মনের ক’জন সংসারত্যাগী সাধুর কাছে। একদিন শহর থেকে ফিরে দেখল রানা: কারা যেন নিষ্ঠুরভাবে খুন করে গেছে মঠের সব সাধুকে।। আগুন ধরে গেল রানার মাথায়। প্রতিজ্ঞা করল:এর শেষ দেখে ছাড়বে ও। পাঠক, এইবার দেখতে পাবেন কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে মাসুদ রানার প্রতিশোধ! আপনার প্রিয় রানা জড়িয়ে গেছে আশ্চর্য রহস্যময় এক শ্বাসরুদ্ধকর জটিলতায়।