অ্যাপাচি চীফ সাদা মানুষ রিচার্ড। কিন্তু অ্যাপাচিদের মাঝেই ওদের কঠিন শিক্ষা-দীক্ষায় বড় হয়েছে সে। এখন আটাশ বছর বয়সে একটা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ভয়ঙ্কর একজন গানম্যানকে অনুসরণ করছে সে। ওর বাল্যবন্ধু এবং শত্রু অ্যাপাচি চীফ নিনোও ওর দলবল নিয়ে অনুসরণ করছে ওকে। মেক্সিকোর সিয়েরা মাদ্রে পাহাড়ে ঘটতে শুরু করল আজব এক নাটক। ঘায়েল খবরটা শুনেই স্টেজ অফিসের উদ্দেশে ছুটল জন ক্যালকিন। দশ দিন ধরে ক্যামেরনে আটকা পড়ে আছে ও। আবার যাত্রা শুরু করতে পারে জন–যদি স্টেজে একটা আসন পায়। এভাবেই আরম্ভ হলো রোমাঞ্চকর এক কাহিনী। ডুয়েল প্রিয় পাঠক, নাগরিক জীবনের ব্যস্ততাকে পাশ কাটিয়ে, চলুন খানিকক্ষণের জন্য ঘুরে আসি রোমাঞ্চকর বুনো পশ্চিম থেকে। আমাদের প্রত্যাশা, সময়টা বেশ ভালই কাটবে আপনার।
অপঘাত জনাকীর্ণ টেক্সাস ছেড়ে আরও পশ্চিমে নিউ মেক্সিকোর দিকে সপরিবারে যাত্রা করেছে ড্যান ট্রেভেন। কিন্তু বিপদসঙ্কুল ট্রেইল রক্তাক্ত হয়ে উঠল নৃশংস রাসলার, রক্তপিপাসু কোমাঞ্চি আর বেপরোয়া কোমাঞ্চেরোদের কারণে। ট্রেভেনদের ঘোড়া আর গরু ছিনিয়ে নিতে চায় ওরা। বুনো পশ্চিমের সেই সময়ের গল্প এটি, যখন অলিখিত একটা নিয়ম মেনে চল সবাই নিজের সম্পত্তি-সেটা গরু, ঘোড়া, জমি আর মেয়ে মানুষ হোকরক্ষা করো! সেজন্যে প্রয়োজনে খুন করো! উত্তরসুরি বেকুব নয় এড ক্রেমার, কিন্তু ভাগ্যান্বেষণে পশ্চিমে আসা পুবের লোকগুলো হয়ে ওয়্যাগন ট্রেনের স্কাউটিং করে বোকামিই করেছে সে। এদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছে, দুর্গম ট্রেইল পাড়ি দিয়ে তাদের নিয়ে যাচ্ছে স্বপ্নের বসতিতে; স্যাম ল্যামসনের অসৎ উদ্দেশ্য সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করেছে, অথচ কেউ বিশ্বাস করেনি ওকে। ল্যামসন চায় স্পেন্সার ভ্যালির দখল আর ডরোথি হেডলিনকে কীভাবে সেসব পেল তাতে কিছুই যায়-আসে না তার। একদিন ঠিকই নিজেদের ভুল বুঝতে পারল সেটলাররা। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। নিরীহ লোকগুলোকে বাঁচাতে পারে কেবল একজন মানুষ এড ক্রেমার
বদলা ভাইয়ের খুনীকে খুঁজতে ম্যাড রিভার কান্ট্রি এসেছে বার্ট। এখানে বিবাদে জড়িয়ে পড়ল সে কেন্ট ব্রাইসনের সঙ্গে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল ডেনিস মাইকেল, চাকরি দিল নিজের র্যাঞ্চে। কিন্তু ভোরবেলা ঘুম থেকে তুলে জানানো হলো ওকে খুনের দায়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নেপথ্য থেকে কে চালছে দাবার খুঁটি? কী স্বার্থ তার? বিল হিকক বু হিল র্যাঞ্চে হচ্ছেটা কী? রহস্যময় সব লোক বাথানের ক্রু। কী চায় সে? কেউ জানে না। কেউ কখনও তাকে কাছ থেকে দেখেওনি। যার যার প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত সবাই। সমস্ত ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু বু হিল বাথানের সীমানার কাছে, পাহাড়ে ঘুরে বেড়ায় রহস্যময় আরেক চরিত্র-ব্লাক রাইডার। ক্রমে জমে উঠল নাটক। একে একে সবার মুখোশ উন্মোচিত হলো। ভাল-মন্দের বিচার করার এখন সময় নেই, বু হিল বাথান, আর সবকিছুর নিয়ামক হয়ে দাঁড়াল কিংবদন্তী একটা নাম-বিল হিকক। রক্ত পিশাচ সামান্থা রিভার্সের বিয়ের দিনই খুন হয়ে গেল বুড়ো সাধক জেড পারভিট। খুনী সন্দেহে বিনা বিচারে ওরা ফাঁসিতে ঝোলাল দুজন আগন্তুককে। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা হলো না সামান্থার । একদিন ভাই আর বোন জামাইয়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে হাজির হলো সুদর্শন ওয়েন রে। রেঞ্জওয়ার দানা বেঁধে উঠছে। বোঝা যাচ্ছে না কে খুনী। খুন হয়ে গেল সামান্থার বাবা। কে যেন ওয়েন রোকে ফাঁসিয়ে দিতে চাইছে। শক্ত লোক ওয়েন। জমে উঠল নাটক ।
রুদ্র সীমান্ত কিঙ বিগ স্পেন্সার, রাজার মতই চাল চলন। তার কথাই আইন। ছেলের উস্কানিতে পাহাড়ের ছোট র্যাঞ্চারদের উৎখাত করার সিদ্ধান্ত নিল। খুন হলো বিল গ্রেহাম। আগুন জ্বলল। খাবার কেনা বন্ধ করে দেয়া হলো। মাইক মরগ্যান নেতৃত্ব দিচ্ছে পাহাড়ীদের। দুর্ধর্ষ পিস্তলবাজ সে-কিন্তু মাত্র কয়েকজন লোক নিয়ে কিঙ সাম্রাজ্যের এত লোকের বিরুদ্ধে কী করতে পারবে? শুরু হলো সংগ্রাম। শয়তানের চক্র পাঁচ বছর পর স্ত্রী ফর্কসে ফিরেছে বব। উদ্দেশ্য, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করবে। কিন্তু শহরে পৌছতে না পৌছতেই উত্তেজনার আঁচ পেল ও। কথা নেই বার্তা নেই সেলুনে গ্রেপ্তার করা হলো ওকে। ওর বন্ধু গ্লেন আর হার্শেলকে নাকি খোঁজা হচ্ছে খুনের দায়ে। রুখে দাঁড়াল বব। বিনা বিচারে খুন হতে দেবে না বন্ধুদের। শর্ত ছয় বছর পর চকটো বেণ্ডে ফের দেখা হলো এদের আত্মবিশ্বাসী টগবগে দুই যুবক, কর্নেল স্টুয়ার্টের অধীন সাবেক ক্যাপ্টেন। একসময় পাশাপাশি চলেছে ওরা, পাড়ি দিয়েছে বহু বিপদসংকুল পথ, অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতই। কিন্তু এখন… পরস্পরকে খুন করতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে হাতে।
স্বর্ণ সন্ধানী ওয়েসাইডে এসে হাজির হলো ওরা। সেখান থেকে ডেডউড। উদ্দেশ্য—স্বর্ণসন্ধান। ভবঘুরে এক আউট-লয়ের বন্ধুত্ব হয়ে গেল ডেভ মুরের সঙ্গে। ডেভ মুর ভালবেসে ফেলেছে নিঃসঙ্গ লরাকে। লরা জানে সোনার খনির সন্ধান। সেজন্যই কি ওকে প্রয়োজন জিম হগম্যানের? ফাঁদ পাতল হগম্যান; ধরা পড়ল লরা। ভয়ঙ্কর বিপদে অজান্তেই জড়িয়ে গেল দুঃসাহসী দুই বন্ধু। ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে যাচ্ছে ডেভ মুর বিনাদোষে। সশস্ত্র লোকগুলোকে ঠেকানোর চেষ্টা করল ডেভ মুরের বন্ধু। পাশে এসে সাহায্যের হাত বাড়াল দুর্ধর্ষ ওয়াইল্ড বিল হিকক। তারপর? মীমাংসা ফোর্ট স্ট্যামবার্গের অবস্থান টেরিটরির সবচেয়ে বিপজ্জনক আইনহীন খনি-শহর সাউথ পাস সিটির পাশে, যেখানে আছে অসংখ্য মাথা গরম নিষ্ঠুর মাইনার, নীচ জুয়াড়ী আর সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী। এবং বাইরে, আক্রমণের সুযোগের অপেক্ষায় আছে ক্ষুব্ধ ইণ্ডিয়ানরা। ফোর্টে জমা করা সোনা রাখতে ভয় পাচ্ছে ক্যাপ্টেন জনসন, কারণ সে জানে, যে কোনও মুহূর্তে খোদ পোস্টেই রেইড হতে পারে, নিমেষের মধ্যে লুঠ হয়ে যেতে পারে লক্ষ টাকার সোনা। ওদিকে সোনা সাপ্লাই নিয়ে যাওয়া কোনও স্টেজই গন্তব্যে পৌছতে পারছে না, লুঠ হচ্ছে পথে। চারপাশে বিশ্বাসঘাতকতা, হীন চক্রান্ত আর সঙ্কীর্ণ স্বার্থসিদ্ধির মরিয়া চেষ্টা… এই অবস্থায় এখানে আগমন জন হেভেনের। একটাই ওর উদ্দেশ্য যেভাবেই হোক আর্মির মান রাখতে হবে…
গৃহযুদ্ধ শেষে বাড়ি ফিরে এল কার্ল শেকেড। দেখল ততদিনে পরপারে চলে গেছে মা-বাবা। ভিটে ও জমি-জমা বেদখল হয়ে গেছে। ফিরে পেতে হলে নিশ্চিত সংঘর্ষে জড়াতে হবে নামের সঙ্গে। মন চাইল না কার্লের। ব্যস, এখানে আর থাকা কেন? চলো পশ্চিমে। ওয়াইওমিং এসে গড়ে তুলল একটা র্যাঞ্চ। চোখে সোনালি ভবিষ্যতের স্বপ্ন। হঠাৎ ঘোড়া ছুটিয়ে দলবল নিয়ে হাজির হলো জস ফিলবি। কার্লকে বলল র্যাঞ্চ তুলে নিতে, কারণ জায়গাটা নাকি তার। কেন এ কথা মানবে কার্ল? মগের মুল্লুক পেয়েছে? বাধল সংঘাত। লিবির ষণ্ডারা পুড়িয়ে দিল কার্লের কেবিন। অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে গেল ও। যার সহায়তায় সুস্থ হলো, সুযোগ পেয়ে সেই রহস্যময়ী ডেবি সিম স র্যাঞ্চ অর্ধেক মালিকানা দাবি করে বসল । উপায়ান্তর না-দেখে রাজি হলো কার্ল, তবে মনে মনে কঠোর শপথ নিল: দেখে ছাড়বে মেয়েটাকে! কিন্তু সবার আগে জস ফিলবির থাবা থেকে রক্ষা পেতে হবে; এবং একইসঙ্গে র্যাঞ্চও বার্চাতে হবে। সফল হতে হলে এক অসম লড়াইয়ে জিততে হবে ওকে-একা!