×
Categories
কষে নেভি সিগারেটে একটা টান দিল তরিকুল ইসলাম। সাত সকালে সিগারেটে কষে টান দেওয়ার অনুভূতিই অন্যরকম। সিগারেটের ধোঁয়াটা যখন বুকে গিয়ে ঘ্যাচ করে আঘাত করে, তার সাথে সম্ভবত কোন ধরনের শান্তিরই তুলনা হয় না। সিগারেট ধরা হাতটা মুখের কাছে আনতেই দেখল তিরতির করে কাঁপছে। নার্ভাসনেস? গ্রাহ্য করল না সে। কারণ জানে কিছুক্ষণ পরেই সব শেষ হতে চলেছে। যে কাজটা সে করতে চলেছে সে তুলনায় হাত কাঁপাকাঁপি কিছুই না। ঠিক এই মুহূর্তে সে দাঁড়িয়ে আছে রমনা পার্কের ভেতর। অপেক্ষা করছে তার শিকারের। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজন মর্নিং ওয়াকে বেরিয়েছে। আজব জায়গা এই রমনা পার্ক। রাত দিন ২৪ ঘণ্টাই মানুষে গিজগিজ করে। এখন যেমন পুরাে পার্ক জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সকালের স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এই মানুষগুলাের স্থান দখল করবে কতিপয় কপােত-কপােতি। বিকেলে মানুষ আসে পরিবার নিয়ে আর রাত গভীর হলেই পুরাে পার্ক দখল করে ফেলে রাতের পাখি। এক মুহূর্তের জন্য খালি হয় না পার্কটা। একজন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধকে দেখল বিশাল সাইজের ভুঁড়ি সামনে দুলিয়ে ‘হুশ...হুশ...' শব্দ করে দৌড়াতে দৌড়াতে তার দিকেই এগিয়ে আসছে। তাকে অনুসরণ করছে বছর তেরাে-চৌদ্দ বছরের একটা ছেলে। সম্ভবত বৃদ্ধের নাতি। দুজনের ছােট্ট দলটা তাকে অতিক্রম করার সময় শুনতে পেল বৃদ্ধ তার নাতিকে সকালের হাঁটার উপকারিতা সম্পর্কে একটা নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা দিচ্ছে। মনে মনে বৃদ্ধকে চ-বর্গীয় একটা গালি দিল সে। “হালারপুত বুইড়া। জোয়ান কালে খেয়াল ছিল না এইসব কথা। তাইলে ত এই বিশাল গামলাডা আর হইতাে না। বুইড়া কালে কাম কাইজ না পাইয়া এহন শরীরের লাইগা মায়া বাড়ছে?” ভাগ্য ভালাে বৃদ্ধ বেশ অনেকদূর চলে গিয়েছে। তরিকুল ইসলামের গালিটুকু শুনতে পেল না। না হলে ঠিকই এতক্ষণে লঙ্কাকাণ্ড বেঁধে যেত। একবার নিজের হাত ঘড়িটার দিকে তাকাল। ৭:২৫ বাজে। আর মাত্র পাঁচ মিনিট। এর মধ্যেই তার কাঙ্খিত শিকার এসে যাবে। বেশ কয়েকদিন ধরে রেকি করে জেনে নিয়েছে তার শিকার ঠিক সাড়ে সাতটায় এই জায়গাটা অতিক্রম করে। এক মিনিট এদিক সেদিক হয় না। আপাতত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মানুষজনের কাণ্ডকারখানা দেখছে তরিকুল ইসলাম। বেশিরভাগই বুড়ােবুড়ি আর ডায়বেটিসেরর রােগি। ঠিক কিছুক্ষণ পর তারা কিসের সাক্ষি হতে চলেছে তা যদি জানতাে! তবে এসব নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই তরিকুল ইসলামের। কাজটা তাকে শেষ করতেই হবে। যেভাবেই হােক। মনে মনে আরেকবার ট্রায়াল দিয়ে নিল; কিভাবে কী করবে। কোমরের কাছে অনুভব করল পিস্তলটার উপস্থিতি। একটু কি শিউরে উঠল তরিকুল ইসলাম? বােধহয়। কোনদিন কোমরে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরবে এটা কল্পনাও করেনি। একেই মনে হয় বলে : “বাস্তবতা কল্পনাকেও হার মানায়। নিজের উপর আস্থা নেই তরিকুল ইসলামের। তাই বলে কাজে ব্যর্থ হওয়াও চলবে না। সুযােগ একটাই। এটাকেই কাজে লাগাতে হবে। সিগারেটে আরেকবার টান দিতে গিয়ে দেখল : শেষ। পাশেই বসা হকারের কাছ থেকে আরেকটা সিগারেট নিল। আজকেই তাে খাবে। সামনে কোনদিন খেতে পারবে কিনা সেটা তাে বলতে পারছে না। সিগারেটে টান দিতে না দিতেই দেখল দূরে তার শিকারের অবয়ব আস্তে আস্তে ফুটে উঠেছে। শেষবারের মত নিজের ইতিকর্তব্য ঠিক করে নিল সে। শিকার যতই সামনে আসছে উত্তেজনায় তরিকুল ইসলামের হার্টবিট ততই বেড়ে যাচ্ছে। ছয় ফিট উচ্চতার সুঠাম দেহের শিকারের পাকা গোঁফের কোণা যখন দৃষ্টিসীমায় এল, তরিকুল ইসলামের মনে হল তার হৃদপিণ্ড লাফ দিয়ে বেরিয়ে আসবে। শিকার তার থেকে এক মিটার দূরে থাকতেই সন্তপর্ণে কোমর থেকে পিস্তলটা বের করে আনলাে। পিস্তলের মৃদু ক্লিক শব্দে শিকার সচকিত হয়ে তার দিকে তাকাল। শিকারের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বিপদ আঁচ করতে পেরেছে। কিন্তু এত কাছ থেকে কিছুই করার ছিল না। বেরেটা ৯২ এফ এস নাইন এমএম পিস্তলের বুলেট শিকারকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিল। একটু দূরেই পেছন পেছন আসছিল শিকারের দুই বডিগার্ড। কিন্তু তাদের কিছুই করার ছিল না। গুলি ছোঁড়ার আগমূহুর্ত পর্যন্ত তারা কিছুই বুঝতে পারেনি। যতক্ষণে বুঝতে পেরেছে ততক্ষণে চারটা বুলেট বিধেছে শিকারের শরীরে। যাকে বলে ক্লিন ডেড।
250.00৳
Supported cards
Supported cards
Titleএকটি খুনের নেপথ্যে
Author
Publisher
ISBN9781556156786
Edition1st Published, 2019
Number of Pages238
Countryবাংলাদেশ
Languageবাংলা

একটি খুনের নেপথ্যে (হার্ডকভার) - নজরুল ইসলাম

250.00৳
Picture of Support | +8809613717171

Support | +8809613717171

24 Hours a Day, 7 Days a Week

Picture of Happy Return Policy

Happy Return Policy

All over Bangladesh

Picture of Worldwide Shipping

Worldwide Shipping

We Deliver Product All Over the World

Picture of Fastest Delivery

Fastest Delivery

Own Distribution Channel