ন্যাংটো-নাচ দেখিয়ে বেড়াত মেয়েটা। কীসে রক্তশূন্য করে দিয়েছে ওকে? শত বর্ষের পুরানো সড়কে কেন এত মৃত্যুর মিছিল? এ কোন অভিশাপ উঠে এসেছে আদিম লেকের গভীর থেকে? তবে কি ইনডিয়ানদের কথাই সত্যি—জেগে উঠেছে কিংবদন্তির নররাক্ষস? দিনেদুপুরে নেকড়েমানব দেখতে পাচ্ছে। বিপথগামী এক দল তরুণ-তরুণী-শুনতে কেমন লাগে না? শেকসপিয়র ঠিকই বলেছেন: দেয়ার আর মোৱ থিংস ইন হেভেন অ্যাণ্ড আর্থ।
ছ’টা কাঠবিড়ালি… গ্রাফিতির মতো, বড়সড় এক রক্তলাল পে্টাকল… একটা হাইপোডার্মিক সিরিঞ্জ… ওল্টানো ক্রুশ… গুলি ভরা পিস্তল… মৃত এক তরুণীকে ঘিরে জনা কয়েক আলখেল্লাধারী… জানেন, কী অর্থ এসবের? জবাবটা জানা আছে বলেই রুখে দাঁড়াল তাহিতি অন্য ভুবনের প্রতিনিধি ওই আত্মা মাদকের বিরুদ্ধে, সঙ্গী হলো টনি ডায়েস আর পিটার পারকার। কিন্তু মিস গ্রেভ? একাকী ও মোকাবেলা করবে কী করে অপার্থিব আতঙ্কটার?
কে এই কোনান? পরোপকারী এক স্বাধীন বীর। কোথাও অন্যায় অবিচার-অত্যাচার দেখলে রুখে দাঁড়ায়। তবে ওর প্রতিবাদের ধরনটা বুনো। কোমল আচরণের কোনও বালাই নেই সিমেরিয়ান যুবকটির মাঝে। কোনানের সাফ কথা: যা ওর ভালো মনে হবে, তা-ই করবে সে পথে যদি কোনও বাধা এসে দাঁড়ায়, সঙ্গে-সঙ্গে উপড়ে ফেলবে। আসুন, এই আদিম, বর্বর যুবকটির সঙ্গে পরিচিত হই। ঘুরে আসি সমৃদ্ধ অতীতের বিস্মৃত সব জনপদ থেকে।
থাগস অভ হিন্দুস্থান: মেয়ে আডাকে হারিয়ে উন্মাদ হয়ে উঠেছেন ক্যাপটেন ম্যাকফারসন। ধুলোয় মিশিয়ে দেবেন এর জন্য দায়ী ধর্মাদ্ধ, খুনে দস্যুদের-এই তার অগ্নিশপথ। ভারতবর্ষ কাঁপিয়ে দেয়া লুটেরাদের গোপন আস্তানার খোঁজ পেতেই এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করলেন না ব্রিটিশ অফিসার। ফোর্স আনতে ছুটলেন ফোর্ট উইলিয়াম-এ। পাইকারি খুনে হাত রাঙাবেন ফিরে এসে। …ঘুণাক্ষরেও যদি বুঝতে পারতেন: কোন খেলা খেলতে যাচ্ছে নিয়তি তাঁকে নিয়ে। দ্য বডিগার্ড: প্রিয় পাঠক, আপনি যদি স্যার আর্থার কোনান ডয়েল, আগাথা ক্রিস্টি, রাফায়েল সাবাতিনি, এইচ. পি. লাভক্র্যাফট, নীল গেইম্যান, রবার্ট ব্লক, সাকি, লী চাইল্ড, হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যাণ্ডারসন, গী দ্য পাছা, এরিখ কেস্টনার, জেফরি আর্চার, লরেন্স ব্লাক, জ্যাক রিচি প্রমুখ বিখ্যাত লেখকদের ভক্ত হয়ে থাকেন; তবে দ্য বডিগার্ড বইটি আপনারই জন্য।
দ্য লায়ন’স স্কিন মা’র করুণ মৃত্যুর বদলা নিতে ইংল্যাণ্ডে এসেছে ক্যারিল। উদ্দেশ্য: রাজদ্রোহিতার দায়ে ফাঁসিয়ে দেবে লর্ড অস্টারমোরকে, যিনি ওর জন্মদাতা হয়েও ওর সবচেয়ে বড় শত্রু। কিন্তু ঘটতে শুরু করল একের পর এক আজব ঘটনা। ক্যারিলের দ্বিধাবিভক্ত মন শোধ নেয়ার আগে ভালোবেসে ফেলল এক অসহায় অনাথ মেয়েকে। ওদিকে ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পেতেছে ওরই সৎ ভাই, তাতে ধরা পড়লে নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড। শেষ পর্যন্ত যে-নাটকীয় ঘটনা ঘটল, সে-ব্যাপারে ঘুণাক্ষরেও কোনো ধারণা ছিল না ক্যারিলের। দক্ষিণের যাত্রী বন্দিশিবির থেকে এল পয়গাম। কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষের আচরণ কংস মামার মতো। মানবিকতার চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে রাজনীতির নোংরা খেলা। শেষ পর্যন্ত বাকি রইল একটা কাজই। বিপন্ন জাহাজের উদ্ধারে এগিয়ে চলল ওরা সাতজন। …মানুষগুলো কোথায়? প্রকৃতির হারামিপনা তো রয়েছেই, ষোলো কলা পূর্ণ করতে মুখ খিচাল রক্তলোভীর দল। প্রাণ বাঁচানোই এখন দায়। এত কিছু সামলে পাবে কি অভিযাত্রীরা সেই মানুষটির হদিস- যার আছে দুই জিভ, দুই হৃদপিণ্ড?