কাউকে যদি ভ্রমণের নেশায় পেয়ে বসে, তাকে ঘরে আটকে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। বিখ্যাত পরিব্রাজক ইবনে বতুতা, মার্কো পোলো, হিউয়েন সাং, নিকোলাও মানুচিসহ বিশ্ব পরিব্রাজকের ভ্রমণকাহিনি পাঠ করে তাদের সময়ের বিশ্ব সম্পর্কে আমরা ধারণা লাভ করেছি। আধুনিক বিশ্বব্যবস্থায় তাদের মতো অবাধে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ নেই। ভ্রমণের ইচ্ছা জাগলেও হুট করে কোথাও যাওয়া যায় না। তা সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যোগাযোগ, দেশে দেশে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়, বাণিজ্যিক সম্পর্ক, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের সম্প্রসারণ এবং পর্যটন-ব্যবসা বিকাশে ভিন্ন অর্থে ভ্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পেশাগত দায়িত্ব পালন এবং শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণের উদ্দেশে আমি বেশ কিছু দেশ ভ্রমণের সুযোগ লাভ করেছি। কোনো কোনো দেশে আমাকে তুলনামূলকভাবে দীর্ঘসময় অবস্থান করতে হয়েছে, যার ফলে ভিন্ন দেশ ও সমাজকে জানার যে সুযোগ পেয়েছি তা পাঠককে জানানোর চেষ্টা করেছি ‘ও আকার ও বিহঙ্গ’ নামে আমার ভ্রমণকাহিনিতে। আমার কোনো কোনো ভ্রমণবৃত্তান্ত সাড়ে তিন থেকে চার দশক আগের, যখন বিদেশ ভ্রমণ বর্তমান সময়ের মতো সহজ ছিল না— সেই পিছিয়ে থাকা সময়ের চিত্র কল্পনা করে আমার ভ্রমণকাহিনি পাঠ করলে পাঠকের কাছে উপভোগ্য হতে পারে।
জনসংখ্যার অনুপাতের বিচারে ভারতের বিপুল জনগোষ্ঠীর মধ্যে মুসলিম সংখ্যা স্বল্প হলেও বিদেশি শাসকদের বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের অবদান ছিল অনেক বেশি। ভারতের ইতিহাসই এর সাক্ষী। ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের বহু আগে থেকে ভারতের বহু মুসলিম শাসক ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়ে শাহাদাত বরণ করেছেন। এমনকি স্বাধীনতা আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখনও আলেম সমাজসহ ভারতীয় মুসলমানদের বড় অংশ দ্বিজাতি তত্ত্বের বিরোধিতা করে অখণ্ড ভারতের পক্ষে অটল ভূমিকা পালন করেছেন। বইটিতে দেশের জন্য ভারতীয় মুসলমাদের অবদান তুলে ধরা হয়েছে।