‘দ্য থিওরি অব এভরিথিং (মহাবিশ্বের জন্ম এবং শেষ পরিণতি)’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ মানবজাতির বুদ্ধিবৃত্তিক দুটি মহান আবিস্কার আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ব এবং কোয়ান্টাম মেকানিক্স। প্রথমটির কাজ মহাকর্ষ, স্থানকাল তথা মহাবিশ্বের বৃহৎ পরিসর নিয়ে। দ্বিতীয়টি কাজ করে অতিক্ষুদ্র পরমাণুর গহন রাজ্য। নিজ নিজ ক্ষেত্রে পরীক্ষা থেকে শুরু করে ব্যবহারিক দিকে দুটি তত্বেই সফল। তবে দুটি তত্ব একই সাথে সফল হতে পারে না, অন্তত তাদের বর্তমান রূপে। কিন্তু এ দটিকে একত্রিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ তত্ব পেতে পদার্থবিদদের একাধিক চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। স্ট্রিং থিওরিকে একসময় এমনই এক পূর্ণাঙ্গ তত্ব বলে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু এ তত্ব থেকে পাওয়া কোনো ভবিষ্যদ্বাণী এখনো বাস্তব পরিক্ষায় প্রমান করা যায়নি। ভবিষ্যতেও সে সম্ভাবণা ক্ষীণ বলেই বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা। তাই এখন নতুন এক তত্বের খোঁজে মাঠে নেমেছেন তারা, যা দিয়ে বিপুল পরিসরের মহাবিশ্ব ও ক্ষুদ্র পরিসরের পরমাণু রাজ্যকে একসুতোয় গাথাঁ যাবে। এ তত্বেরই পোশাকি নাম থিওরি অব এভরিথিং। কিন্তু কেমন হবে বহু প্রত্যাশিত সেই তত্ব? কী করা যাবে সেই তত্ব দিয়ে? তাতে কী এই মহাবিশ্বের সব রহস্যের জবাব পাওয়া যাবে। এ বইতে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তাত্বিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং। আকারে ক্ষীণ, বক্তব্যে সংক্ষিপ্ত হলেও যা গুরুত্ব ও তাৎপর্য্ বিপুল। এই ধারাবাহিক বক্তৃতাগুলোকে আমি মহাবিস্ফোরণ থেকে কৃষ্ণগহ্বর পর্যন্ত মহাবিশ্বের ইতিহাস নিয়ে আমাদের ভাবনার একটা রূপরেখা দেওয়ার চেষ্টা করব। প্রথম বক্তৃতায় মহাবিশ্ব সম্পর্কে অতীতের ধারণাগুলো সংক্ষেপে বলব। একই সঙ্গে মহাবিশ্বের বর্তমান চেহারা কিভাবে পেলাম, সেটিও থাকবে এখানে। দ্বিতীয় বক্তৃতায় মহাকর্ষ্ সম্পর্কে নিউটন আর আইনস্টাইন তত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মহাবিশ্ব স্থির হতে পারে না, মহাবিশ্বকে হয় প্রসারণশীল, নয়তো সংকোচনশীল হতে হবে-তাঁদের তত্বগুলো কীভাবে এই সিদ্ধান্তের দিকেই ইঙ্গিত করে, এখানে সেটিই দেখাব। এতে দেখা যায়, আজ থেকে ১০ থেকে ২০ বিলিয়ন বছর আগের মধ্যবর্তী কোনো একটি সময়ে এই মহাবিশ্বের ঘনত্ব অবশ্যই অসীম ছিল। একেই বলে মহাবিস্ফোরণ। সম্ভবত মহাবিশ্বের সূচনা হয়েছিল এখান থেকেই।