অনাথ বালিকা ফুলবানু বৃদ্ধ হজমি ওয়ালার খোঁজে জয়বাংলা আচার ঘরে ঢুকে পড়ে। উঁচু তাক থেকে একটি বয়াম ধরার সময় ওর হাতটি ফসকে গেলে ভেতরের পুরনো দরজাটি খুলে যায়। বন্দুকের ক্যাট ক্যাট শব্দের সাথে বারুদের গন্ধের ঝাপটা এসে নাকে লাগে। ফুলবানু আবিষ্কার করে এটি একটি যাদুকরী দরজা। এর ভেতর দিয়ে সে অনায়াসে ১৯৭১ সনে যাতায়ত করতে পারে। অন্য কেউ জানতে পারলে দরজার যাদু চলে যেতে পারে ভেবে সে তা গোপন রাখে। দরজার ওপারে, একাত্তরে, সে এক যুবকের দেখা পায়। মুক্তিযোদ্ধা যুবকটি ছিল শত্রুর হাতে বন্দি। পাকিস্তানিরা ওকে ভীষণ অত্যাচার করে। মুক্তি পেতে যুবকটি বালিকার সাহায্য চায়। সাহায্যের খোঁজে বেরিয়ে ফুলবানু পথে যুদ্ধ, পাকিস্তানিদের ধংসযজ্ঞ, এবং অত্যাচারের নমুনা দেখতে পায়। কিন্তু ফিরে এসে দ্যাখে আচার ঘরটির সাথে যাদুকরী দরজাটিও কেউ ভেঙে ফেলেছে। তাহলে কি ফুলবানু আর বন্দি যুবকের দেখা পাবে না? না পেলে তো কেউ ওর যাদুকরী ভ্রমণের কথা বিশ্বাস করবে না। তাই সেই মুক্তিযোদ্ধা যুবকের দেখা ওর পেতেই হবে...।
ফ্ল্যাপে লিখা কথা: শাসম আল মমীনের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা তিন। চিতায় জুলন্ত জ্যোৎস্না এবং মনোলগ কাব্যগ্রন্থ দুইটি যথাক্রমে ১৯৮৫ এবং ২০০১ সালে প্রকাশিত হয়। ২০০৯ সালে ছাপা হয় অনুবাদগ্রন্থ সাম্প্রতিক আমেরিকান কবিতা। তিনি দুই সন্তানের জনক। নাদিয়া ও ইভান। তাঁর স্ত্রী নাজ রওশন মমীন (লোপা)।
"নির্বাচিত কবিতা" ফ্ল্যাপে লেখা কথা: "শামস আল মমীনের 'লি শেন' কবিতাটি পড়ে কেন যেন আমি অস্থির হয়ে উঠেছিলাম, আমার মনে হয়েছিল ছুটে যাই লি শেনের কাছে যে একা, বিচ্ছিন্ন বাবা বা মায়ের কাঙাল, যার অন্তরের কান্না প্রতিমুহূর্তে বড় হচ্ছে, বিশাল হচ্ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে ইরাকে, লিবিয়ায়, সিরিয়ায়, আফ্রিকায়, পৃথিবীর দেশে দেশে"- বলেছেন কবি মতিন বৈরাগী। মমীনের কবিতা সহজেই ছুঁয়ে যায় মানুষ, প্রকৃতি ও নিসর্গ। তাই তিনি অনায়াসে বলতে পারেন: 'তোমাদের জন্য রেখে যাব ভরা নদী, খালবিল নদী ও হাওরের কিলবিল মাছ রেখে যাব শস্যক্ষেত ধনেপাতার নরম গন্ধ' তাঁর কবিতা প্রসঙ্গে সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, 'সকল বিশ্লেষণ স্থগিত রেখে তাকে শুদ্ধ কবি বলাই আমি সঙ্গত মনে করি। মাত্র গোটা ছয় কবিতার বই লিখিয়াছেন মমীন। তাহাতেই তাহাঁর স্বরলিপি শিলালিপি হইয়া উঠিয়াছে। মমীনের কবিতায় বাংলাদেশের নতুন কথা আছে। আর আছে উত্তর আমেরিকার পুরানা ছবিও। এই অভিজ্ঞতার কিয়দংশ তিনি বাংলা কবিতায় যোগ করিতেছেন। ইহাতে বাংলা কবিতায় একপ্রকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কায়েম করিয়াছেন তিনি। 'নির্বাচিত কবিতা' তারই সত্য উদাহরণ।
আমাদের সমাজ ব্যবস্থার আলোকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্যের তুলনা করে ব্যক্তিগত মতামত দিয়ে লেখা কয়েকটি রস-রচনা। এর কোনোটি গল্পের আকারে বলা প্রবন্ধ, কোনোটি প্রবন্ধের আকারে বলা গল্প, আবার কোনোটি গল্পের কাঠামোয় লেখা বৈজ্ঞানিক তথ্য। অথচ প্রতিটিতেই রসের আড়ালে লুকিয়ে থাকা গভীর চিন্তার খোরাকও প্রচ্ছন্ন। তাই পড়া শেষ হয়ে গেলেও পাঠকের মনে তার রেশ রয়ে যায়। যে-লেখাগুলো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো পাঠকরা সাদরে গ্রহণ করেছেন ও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। পাঠক-সমালোচকরা এক কথায় লেখাগুলোকে ‘বৈজ্ঞানিক গলপ্রবন্ধ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রচলিত সংজ্ঞায় বইটিকে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি বলা যেতে পারে।