এ বই তাজউদ্দীন আহমদের কাছে লেখা ও তাঁর লেখা চিঠির সংগ্রহ। প্রথম চিঠিটি ১৯৫৩ সালের। এরপরের চিঠিগুলো ১৯৫৫, ১৯৬৬-৬৭ ও ১৯৭১ এবং তার পরবর্তী সময়ের। চিঠিগুলোর মধ্যে রয়েছে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের পরিক্রমা আর একটি জাতির রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠার বিভিন্ন পর্বের ইতিহাস। একাত্তরে যুদ্ধের দিনগুলোতে বিশাল দায়িত্ব নিয়ে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। কর্মযোগী মানুষটির কাছে প্রতিদিন অজস্র চিঠি আসত। যুদ্ধ সংগঠনের কত বিচিত্র প্রয়োজনের কথা সেই সব চিঠিতে। দেশ-বিদেশ থেকে আসা প্রতিটি চিঠি পড়ে জরুরি চিঠিগুলোর উত্তর দিতেন। সংরক্ষণ করতেন সব চিঠি। আর প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠিয়ে দিতেন সংশ্লিষ্ট বিভাগে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে সমর্থন জোগাড় করতে বিদেশে নানাজনের কাছে লিখতেন। আবার সমান গুরুত্ব দিয়ে উত্তর দিতেন ছোট্ট শিশুর চিঠিরও। চিঠিগুলো বাংলাদেশের ইতিহাসের অমূল্য দলিল।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন শিল্পী মুর্তজা বশীর। ভাষাশহীদ বরকত মারা যান তাঁর চোখের সামনে। হাসপাতালে দেখেছিলেন রফিকের খুলি উড়ে যাওয়া লাশ। তিনি তখন আর্ট কলেজের ছাত্র। মার্ক্সবাদী রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখছেন। মনে শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন। ভাষা আন্দোলন হয়ে উঠল তাঁর আজীবনের প্রেরণা। পরের বছর হাসান হাফিজুর রহমানের একুশে ফেব্রুয়ারী সংকলনে প্রধান দুই রেখাচিত্রশিল্পীর একজন। সেই থেকে শুরু। এ বই ভাষা আন্দোলন নিয়ে মুর্তজা বশীরের স্মৃতি ও স্বপ্নভরা লেখা এবং শিল্পকলার সমারোহ।
চট্টগ্রাম সফরকালে বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তাদের হাতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নিহত হওয়া এবং এর পরপরই আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল মঞ্জুরকে গ্রেপ্তার ও নির্মম হত্যার ঘটনা এ বইয়ের মূল বিষয়। জিয়া হত্যার দায়ে সংক্ষিপ্ত সামরিক আদালতের রায়ে যাঁদেরকে দোষী সাব্যস্ত ও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, কেবল তাঁরাই কি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন? সাত্তার সরকারের গঠিত সেনা ও বিচার বিভাগীয় তদন্তে কি প্রকৃত সত্য বেরিয়ে এসেছিল? জেনারেল মঞ্জুর কি আসলেই চট্টগ্রামের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন? নাকি ষড়যন্ত্রের শিকড় ছিল আরও গভীরে? আমাদের কাছে ইতিহাসের এই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহের অনেক কিছুই আজও অনুদ্ঘাটিত। ঘটনার সময় এ বইয়ের লেখক ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। কাছ থেকে অনেক কিছু জানার, অনুসরণ করার সুযোগ হয় তাঁর। লেখকের অভিজ্ঞতার বিবরণসংবলিত এ বই অনুসন্ধানের নতুন জানালা খুলে দেবে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একটি সম্পূর্ণরূপে অনালোচিত অধ্যায় ১৯৭১ সালের ৫ ও ৬ জুলাই অনুষ্ঠিত শিলিগুড়ি সম্মেলন। এই সম্মেলন অনেক বিভ্রান্তি দূর করে যুদ্ধের সময় অনুসরিীত নীতি প্রণয়নে সহায়তা করে। এই সম্মেলন নিয়ে আসে সংহতি, ত্বরান্বিত করে পরিকল্পিত যুদ্ধ এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যায় দ্রুত বিজয়ের দিকে। কিন্তু অতীব গুরুত্বপূর্ণ এই সম্মেলনের বিস্তারিত বিবরণ ও দাপ্তরিক কার্যপ্রণালি কোথাও সংরক্ষণ করা হয়নি। প্রথমা প্রকাশিত 1971: The Siliguri Conference বইটিতে প্রথমবারের মতো সম্মেলনের সময় অনুষ্ঠিত আনুষ্ঠানিক বৈঠকের কার্যপ্রণালি এবং অনানুষ্ঠানিক আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রকাশিত হয়। সঙ্গে ছিল বিশদ ভূমিকা। এই বই সেই ঐতিহাসিক দলিলের নির্ভরযোগ্য সুসম্পাদিত বাংলা অনুবাদ।
তিমি ও ডলফিন প্রাণিজগতের এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। বৈজ্ঞানিক তথ্যের মিশেলে রহস্যভরা তিমি ও ডলফিনের গল্প-কাহিনি নিয়ে এমন বই বাংলাদেশে এটিই প্রথম। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মনে নির্মল আনন্দ জোগানোর পাশাপাশি তাদের জানার পরিধিকেও বাড়িয়ে তুলবে এই বই। প্রাণিজগতে তিমি ও ডলফিন অনন্য বৈচিত্র্যের অধিকারী। এরা আমাদের মতো স্তন্যপায়ী প্রাণী কিন্তু বাস করে পানির গহিন অন্ধকারে। ফলে অধিকাংশ সময় এরা থাকে লোকচক্ষুর অন্তরালে। এদের সম্পর্কে মানুষের জানাশোনা যেমন অল্প তেমনি বিজ্ঞানীরাও এদের সম্পর্কে এখনো পুরোপুরি জানতে পারেননি। এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকার নদ-নদীতে বাস করে আকর্ষণীয় কয়েক প্রজাতির ডলফিন। আচার-আচরণ ও জেলেদের সঙ্গে এদের বিশেষ সম্পর্ক রূপকথা, পুরাকাহিনি ও লৌকিক গল্পগাথায় স্থান করে নিয়েছে। অন্যদিকে মেরুদেশের গভীর হিমশীতল জলরাশিতে বাস করে দৈত্যাকার রহস্যময় নানা জাতের তিমি ও ডলফিন। মেরুবাসী এস্কিমো ও ইনুয়িত উপজাতির সঙ্গে এদের রয়েছে জীবন-জীবিকার সম্পর্ক। অতীতে মুনাফালোভী শিকারিরা এদের ওপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। রহস্যময় এই সামুদ্রিক প্রাণী দুটি সম্পর্কে নানা বৈজ্ঞানিক তথ্যসহ অনেক জটিল কিন্তু কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় গল্পাকারে লেখক এ বইয়ে তুলে ধরেছেন। কিশোর-তারুণসহ সব বয়সী পাঠকের মধ্যে তিমি-ডলফিন সম্পর্কে জানার আগ্রহ সৃষ্টি করবে বইটি।
এ উপন্যাস গণিত নিয়ে। এর প্রধান দুই চরিত্র গণিতবিদ মেজোকাকু এবং ‘গণিতের রানি’ বলে খ্যাত নাম্বার থিওরি। বইটি হাতে নিলে পাঠক হারিয়ে যাবেন গণিতের আনন্দময় এক রাজ্যে।