জাপানের বিখ্যাত অকাল প্রয়াত লেখক নানকিছি নিইমি (১৯১৩-১৯৪৩) ১৭ বছর বয়সে এ গ্রন্থ রচনা করেন। ছবি আঁকেন গেনজিরো মিতা (১৯১৮-২০০০)। এ গ্রন্থে একটি দুষ্ট শিয়ালের করুণ পরিণতি বর্ণনা করা হয়েছে। আশা করি পাঠকের মনে সামান্য হলেও এ গল্প সাড়া জাগাবে। মূল গল্পটি নানকিছির অনন্য সৃষ্টি। আমি অনুবাদের সময় মূল গল্পের স্বাদ ও সৌন্দর্য।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাপানের বিখ্যাত লেখক টুছিয়া ইউকিয়ো (১৯০৪-১৯৯৯) রচনা করেন এ গ্রন্থ। ছবি আঁকেন মোতোইছিরো তাকেবে (১৯১৪-১৯৮০)। লেখক তিনটি হতভাগ্য হাতির মৃত্যু কাহিনির মাধ্যমে বর্ণনা করেন যুদ্ধের নিষ্ঠুরতা।
নাওমি ওয়াতানাবে রচনাসমগ্র-১ গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে- যাপিত জীবনে আমার বাংলাদেশ, আমি কোথায় দাঁড়াবো, গন শিয়াল, তিনটি হতভাগ্য হাতির মৃত্যুকাহিনি, লেখকের চিঠি, প্রতিবেশীগণ। নাওমি ওয়াতানাবের গ্রন্থগুলোতে বাংলাদেশ ও জাপানের যে জীবনচিত্র, সমাজজিজ্ঞাসা, সংস্কৃতিভাবনা, ঐতিহ্যচেতনা, লোকউপাদান প্রতিফলিত হয়েছে তার মধ্যে লেখকের সুগভীর অর্ন্তদৃষ্টি, পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণী দক্ষতা সুস্পষ্ট রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। নাওমি এখানে মানুষ ও মানুষের সহযাত্রী হয়েছেন, সারথি হয়েছেন ক্ষুব্ধ জীবনবাদী দ্রোহীজনের।
বইটির কিছু অংশঃ ম্যাজিক আওয়ার (Magic Hour): আজকেও মিকা তার সাথে সমুদ্রতীরে এসেছিল। প্রতি সপ্তাহের শেষে মিকা বাড়ি থেকে বেরিয়ে সমুদ্রতীরে হাঁটতে যায়। হাঁটার সঙ্গী হলো শ্বশুর বাড়ির একটা জীর্ণ-শীর্ণ কুকুর। কুকুরটির নাম মুকুর, এখন তার বয়স ২০ বছর। মুকুরের সাথে মিকার প্রথমে পরিচয় হয়েছে ৫ বছর আগে, এক বসন্তের দিনে। বিয়ের আগে যখন মিকা তার হবু স্বামী রিকির বাড়িতে প্রথমে বেড়াতে গিয়েছিল, তখন বয়স্ক কুকুর মুকুর বাড়ির ছোট বাগানে ঘুমাচ্ছিল। সে নিষ্প্রাণভাবে এক নজর মিকাকে দেখে আবার ঘুমাতে শুরু করল। মুকুরের গায়ের ঝোপের মত চুলগুলো ছিল এলোমেলো, চাকচিক্যহীন, দেখতে অতিক্লান্ত। বাগানে দেখা যাচ্ছিল বিভিন্ন রঙের বসন্তের ফুল। শীতকালে তুষার আবৃত মাটির নিচে ধৈর্য ধরে তারা বসন্তের জন্য অপেক্ষা করছিল। এখন তারা বসন্তের কোমল আলো ও মৃদুমন্দ বাতাসের সাথে মিশে আনন্দে দুলছিল। এমন জীবন্ত দৃশ্যর মধ্যে একটা শীর্ণ কুকুর। এই বৈসাদৃশ্যর জন্য মিকা মনে মনে হাসল।
নাওমি ওয়াতানাবে জাপানের মানবতাবাদী লেখক। তিনি জাপানের নিইগাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স প্রােগ্রামে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও এর ইতিহাস, ঐতিহ্য নিয়ে প্রচুর আগ্রহ ও ভালােবাসা থাকায় দীর্ঘদিন এদেশে থেকেছেন। খুব কাছ থেকে দেখেছেন বাংলাদেশকে। সুমিও এবং সুমন গল্পে লেখক অত্যন্ত মমতা মাখা ভাষায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, বাংলা ভাষার প্রতি সুমিও নামের এক জাপানি কিশােরীর গভীর ভালােবাসার কথা তুলে ধরেছেন। সুমিওর ভেতর এই ভালােবাসা তৈরি করে দিয়েছে তাঁর নানি সুমিকো-সান। তিনিও স্বাধীনতার আগে এদেশে নার্সের কাজ করেছেন। তখন থেকে তিনি খুব কাছ থেকে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেছেন। এই গল্পে সুমিও তার প্রতিবেশী বন্ধু সুমনকে বুঝিয়ে দিয়েছে কিভাবে দেশকে ভালােবাসতে হয়, এর মানুষকে ভালােবাসতে হয় আর ভালােবাসতে হয় মায়ের ভাষাকে। এই গল্পে যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হলাে, মা, মাতৃভাষা, মুক্তিযুদ্ধ এই তিন একই সুতােয় গাঁথা।
বর্ষীয়ান শিক্ষাবিদ মকবুল আহমেদ সাহেবের দুটি পাণ্ডুলিপি (আমার প্রথম পাঠ: ১ম ভাগ এবং ২য় ভাগ) আকস্মিকভাবে দেখার সুযোগ ঘটে গেল। আহমেদ সাহেব আমার গুরুজন, কারণ আমি তাঁর বয়ঃকনিষ্ঠ। এই বৃদ্ধ বয়সেও এদেশের শিশুদের কথা ভেবে তিনি যে উদ্যোগ গ্রহণ ও পরিশ্রম স্বীকার করে বই দুটি লিখে উঠতে পেরেছেন তা আমাদেরই সৌভাগ্য। ছোটদের জন্যে এরকম বই যত হবে ততই দেশের মঙ্গল। 'আমার প্রথম পাঠ'-এর দুটি খণ্ডই শিক্ষার্থীদের খুব কাজে আসবে। ( হায়াৎ মামুদ অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় )
বর্ষীয়ান শিক্ষাবিদ মকবুল আহমেদ সাহেবের দুটি পাণ্ডুলিপি (আমার প্রথম পাঠ: ১ম ভাগ এবং ২য় ভাগ) আকস্মিকভাবে দেখার সুযোগ ঘটে গেল। আহমেদ সাহেব আমার গুরুজন, কারণ আমি তাঁর বয়ঃকনিষ্ঠ। এই বৃদ্ধ বয়সেও এদেশের শিশুদের কথা ভেবে তিনি যে উদ্যোগ গ্রহণ ও পরিশ্রম স্বীকার করে বই দুটি লিখে উঠতে পেরেছেন তা আমাদেরই সৌভাগ্য। ছোটদের জন্যে এরকম বই যত হবে ততই দেশের মঙ্গল। 'আমার প্রথম পাঠ'-এর দুটি খণ্ডই শিক্ষার্থীদের খুব কাজে আসবে। ( হায়াৎ মামুদ অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় )