কোনো এক অজানা সময়ে চিতা সামরিক বাহিনী দখল করে রেখেছিলো সমতল ভূমি। তাদের নির্মমতায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলো বিজ্ঞানী, মনিষীদের তিলে তিলে গড়ে তোলা সভ্য এক লোকালয়। চিতা সামরিক বাহিনীর হাত থেকে সমতলকে রক্ষা করতে তরুন প্রটাগনিস্ট ত.যে পথে এগোয় তাতে এক মহাবিশ্ব ভাগ হতে পারে কয়েকটি মহাবিশ্বে। এ রহস্যের মধ্যে দিতা ও তার ঘড়ি। ভিন্ন স্বাদের এই বিজ্ঞান-কল্পকাহিনির রহস্যের বিভিন্ন স্তর উন্মোচন করে পাঠক আনন্দ পাবেন।
গ্যালাক্সির এক বর্বর সভ্যতা আউরেউরগথদের মহাকাশযান অনুসরণ করছে আন্তারেস জাহাজকে। আউরেউরগথ আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারবে কি আন্তারেসের মহাকাশ-নাবিকেরা, যাদের মধ্যে রয়েছে বহু কিশোরী ও কিশোর? এই অল্পবয়স্ক অভিযাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করছে অপ্রত্যাশিত সব আবিষ্কার যা আন্তারেসকে নিয়ে যাবে এক নতুন পথে। রোমাঞ্চকর এই আন্তঃনাক্ষত্রিক অভিযানে পাঠককে আমন্ত্রণ।
আমি চোখ খোলার চেষ্টা করতেই ভড়কে গেলাম। কী আশ্চর্য; চোখের পাতা যেন গভীরভাবে আটকে গেছে! প্রবল ঘুমের ঘোরে থাকলে আমাদের চোখের পাতা যেভাবে আটকে থাকতে চায়, সেভাবে পাতা আটকে আছে। অনেক কষ্টে তাকিয়ে দেখি, ট্রেনের ভেতরে আমার সব বন্ধু আতংকিত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর বলছে, ‘অ্যাই, চোখ খোল, চোখ খোল।’ আমি তাকাতেই চিকু চেঁচিয়ে উঠল, ‘কুক, কী হয়েছিল তোর?!’ সব ঠিকঠাক চলছিল কিন্তু হঠাৎ এক দুঃস্বপ্ন আমাকে করে তুলেছে অস্বাভাবিক, অস্থির! কিছুদিন হলো কিম্ভুতকিমাকার এক স্বপ্ন আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। হয়তো স্বপ্ন বলাও ঠিক হচ্ছে না। স্বপ্ন তো রং, ঘ্রাণ, প্রাণস্পন্দনে এতটা বাস্তবিক হয় না। অদ্ভুতুড়ে কিছু ঘটছে আমার সঙ্গে! এটি কানেকশনের গল্প। এক সংযোগের গল্প। কারও মতে দুঃস্বপ্ন, কারও মতে আধিভৌতিক, আবার কারও মতে সমান্তরাল বিশ্ব! যাত্রা গহীন অরণ্যে। কটকা পয়েন্ট-জামতলা সৈকত-তারপর আড়ালের গল্প।
প্রলয় একজন ফেরারী আসামী। সে কখনও কারো সাথে প্রতারণা করেনি, এছাড়া এমন কোনো অপরাধ নেই যেটি সে করেনি। সে ধরা পড়বে কখনও ভাবেনি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে। দুর্ভেদ্য কারাগারে তার বাকী জীবন কাটাতে হবে — অন্তত সেটাই সবাই ভেবেছিল। কিন্তু প্রলয়ের মস্তিষ্ক অবিশ্বাস্য ক্ষুরধার। কারাগারের চার দেওয়ালের মাঝখানে সে কী আসলেই বাকী জীবন কাটিয়ে দেবে? কাটানো উচিৎ?
মৃতপ্রায় পৃথিবী। চাঁদ ততদিনে গ্রহটি থেকে আরো অনেক দূরে চলে গেছে। জলভাগে বিশাল পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ প্রতিকূল। আগে থেকেই পৃথিবী ছেড়ে এ্যান্ড্রোমিডার দূর গ্রহগুলোতে রিকান কিংবা রায়নার মতো পাড়ি জমিয়ে ফেলেছে অনেকে। বাকি যারা, তারা পৃথিবীতে পড়ে থাকে একরকম ভাগ্যহত হয়ে। এমন প্রায় পরিত্যক্ত এক পৃথিবী আর তার সূর্যের দিকে দৃষ্টি পড়ে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান সত্তাটির। পৃথিবীকে সত্তাটি নিজের আবাস বানাবে আর সূর্যের চারপাশে ডাইসন স্ফিয়ার তৈরি করে মেটাবে নিজের জ্বালানী চাহিদা। নিজেদের শেষ সম্বল একটি রকেট নিয়ে এই অসম্ভব ক্ষমতাধর সত্তাটিকে থামাতে অভিযান শুরু করে পৃথিবীর চারজন আনকোরা তরুণ তরুণী – নোরা, কিরা গ্রুস আর ক্রিক। সাথে থাকে একেবারেই অদক্ষ একজন পাইলট— উরু। ব্যর্থ হবার সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে এগোতে থাকা দলটি একটা সময়ে গিয়ে মেশে রিকান আর রায়নার ঘটনাপ্রবাহে। বুদ্ধিমান রিকান আর দুঃসাহসী রায়না ততদিনে নাম লিখিয়েছে আন্তঃনাক্ষত্রিক চুরি-ডাকাতির খাতায়। দলটি বুঝতে পারে যে পৃথিবীর দিকে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান সত্তাটির শুরু করা ধ্বংসযাত্রা থামাতে রিকান আর রায়নাকে তাদের অনেক বেশি প্রয়োজন ।তারা সবাই মিলে কি শেষমেশ পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারবে?
বহুকাল আগে পৃথিবী আর গ্রহগুলো সূর্যের অংশ ছিল। সূর্য ছিল জলন্ত অগ্নিকুণ্ড আর প্রচণ্ড গরম। একদিন গ্রহগুলো সূর্য থেকে ছিটকে ছোটো ছোটো টুকরো হয়ে আকাশে ছড়িয়ে পড়ল। কিন্তু ছিটকে পড়া টুকরোগুলো পরস্পরকে ছেড়ে গেল না। এরা সূর্যের চারপাশে ঘুরে বেড়াতে থাকল। পৃথিবী তখন ছিল আগুনের ফুলকির মতো। উত্তপ্ত সূর্য ঠান্ডা হতে শুরু করল। তখন পৃথিবীও শীতল হতে থাকল। সূর্যের চেয়ে পৃথিবী ছোটো। তাই তার ঠান্ডা হতে সময় কম লাগল। ধীরে ধীরে পৃথিবী যথেষ্ট ঠান্ডা হয়ে গেল। যখন পৃথিবী অনেক বেশি ঠা ্ডা হয়ে এলো, বাতাসের জলীয়বাষ্প তখন পানিতে রূপান্তরিত হলো। তারপর বৃষ্টি এলো। একটানা দীর্ঘসময় বৃষ্টি হলো। একসময় পৃথিবী আরও বেশি ঠান্ডা হলো। ঠান্ডা হতে হতে পৃথিবী হিমশীতল হয়ে গেল। পৃথিবীর তাপমাত্রা কমে পরম শূন্যের কাছাকাছি চলে এলো। একসময় পৃথিবীর তাপমাত্রা স্থায়ী হয়ে গেল হিমাঙ্কের নিচে।