সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে আনন্দেই দিন কাটাচ্ছিলাে কমান্ড্যান্ট কামিল ভেরােভেন। এরইমাঝে জোড়া খুনের নৃশংসতায় হতবিহ্বল হয়ে পড়ে পুরাে ক্রিমিনাল ব্রিগেড । সবচেয়ে সাহসি অফিসারকেও নির্বাক করে দেয় খুনির পৈশাচিকতা। কিছুদিনের মধ্যেই কামিল আবিষ্কার করে, বিখ্যাত কিছু ক্রাইম-ফিকশনের অনুকরণে হচ্ছে এসব খুন। সঙ্গে সঙ্গে পত্রপত্রিকাগুলাে খুনিকে “নভেলিস্ট” নামে ডাকতে শুরু করে দেয়। নভেলিস্টের হত্যাযজ্ঞ কোথায় গিয়ে থামবে তা কেউ জানে না । উকণ্ঠার মাঝে প্রতিটি দিন পার করতে থাকে সবাই। ক্রিমিনাল ব্রিগেডের সবচেয়ে দুর্ধধর্ষ অফিসাররা কী পারবে নভেলিস্টকে থামাতে? সবার চোখ এবার শিকার এবং শিকারির উপরে নিবদ্ধ । অবশেষে কেসটা হয়ে ওঠে দু-জন মানুষের মধ্যেকার এক দ্বৈরথে । একে অন্যকে ছাড়িয়ে যাবার জন্য মরিয়া তারা কিন্তু যার ক্ষতি যতাে কম হবে কেবল সে-ই জয়ি হবে এ লড়াইয়ে।
যুগলটির বয়স বেশি না। ছেলেটির ঠেলেঠুলে ঊনিশ, মেয়েটির সতের। বিল্ডিংয়ের পেছনে কোন মানুষ নেই। তিনটি গাড়ি সুন্দর করে পার্ক করা। পার্কিংলট হিসেবে বাড়ির পেছনের জায়গাটুকু ব্যবহারের উদাহরণ ঢাকায় বিরল। ব্যাকডােরটা হা-করে খােলা থাকে রাত এগারােটা পর্যন্ত। বাসিন্দারা গাড়ি পার্ক করে ওপথে সুন্দর করে ঢুকে যেতে পারে। | রাত এগারটার পর আধঘণ্টা অতিবাহিত হয়েছে। দরজা বন্ধ থাকায় পার্কিংলটে এখন কেউ নেই। গাড়ি থেকে আস্তে করে বের হয়ে সাবধানে দরজা লাগাল রুহান। ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই তার, তবে গাড়ি ভালই চালায়। আজকে ছােটখাটো একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে অবশ্য। এ মুহূর্তে ফ্রন্ট বাম্পারের নড়বড়ে অবস্থা দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস গােপন করলাে সে। বাবা যখন দেখবে খবর হয়ে যাবে। অন্যপাশে এসে প্যাসেঞ্জার সিটের দরজা খুলে দিল। আপাতত দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই, সময়েরটা সময়ে দেখা যাবে। রুহান চিন্তার ছাপ সরিয়ে মুখে চমক্কার হাসিটা ফুটিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল প্রেমিকার দিকে। কাঁধ পর্যন্ত কাটা চকচকে চুল দুলিয়ে ওর দিকে ঘুরে তাকালাে অরনী, তারপর হাত ধরে গাড়ি থেকে বের হয়ে এলাে। বের হয়েও হাতটা ছাড়লাে না মেয়েটি। রুহান ওকে দেওয়ালের দিকে নিয়ে গেলাে। চোখ বন্ধ করে ফেললাে অরনী। ঠোঁটের কাছে রুহানের ঠোঁটের স্পর্শ পেতে চুপচাপ গ্রহন করলাে আদরটুকু। অরনীর ঘন ভ্রুর দিকে তাকায় রুহান। “ভেবে দেখ, বাসায় কেউ নেই। এখন কি তােমার যাওয়াটা খুবই দরকার?” রুহানের গলা জড়িয়ে ধরে অরনী। “আম্মু মেরে ফেলবে...আরেকদিন। এখন একটু ধরে থাকো।” বিকট অথচ ভোঁতা শব্দটার সাথে ছিটকে এলাে কাঁচ। ভারি জ্যাকেটের কারণে রুহানের পিঠের কোন ক্ষতি হলাে না অবশ্য। ছিটকে দেওয়ালের দিকে সরে গেছে অরনী, দুই চোখ বিস্ফারিত। রুহানের কাঁধের ওপর দিয়ে তাকিয়ে আছে আতঙ্কিত চোখে। ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ালাে রুহান। এক নজর দেখেই বুঝতে পারলাে, বাম্পার নিয়ে চিন্তা করার আর কোন কারণ নেই। বাবার চোখ ওদিকে পড়ার কথা নয় আর। গাড়িটার ছাদের ওপর এসে পড়েছে একটি মানবদেহ। সাততলা বিল্ডিংয়ের হাদের ওপর থেকে এই পতন। দেখামাত্রই বুঝতে পারলাে রুহান। ঝট করে তাকালাে ওপরের দিকে। বিশালদেহের কেউ দাঁড়িয়ে ছিলাে ওখানে, তাকানােমাত্রই নিমেষে উধাও হয়ে গেলাে সে। কাঁপা পায়ে সামনে এলাে রুহান, গাড়ির ছাদ তুবড়ে দিয়ে পড়ে থাকা মানুষটির মাথা থেকে ঘিলু বেরিয়ে এসেছে, রক্তের ধারা গড়িয়ে উইন্ডশিল্ডের ওপর দিয়ে নেমে এসেছে বনেটের ওপর। ছড়িয়ে গেছে অনেকটা। পেছনের কাঁচ ভাঙলেও উইন্ডশিল্ডটা টিকে গেলাে কিভাবে সেটা একটা বিস্ময়। পড়ে থাকা দেহটার মুখের অবশিষ্টাংশ দেখে আঁতকে উঠলাে। “মাই গড!” বিড় বিড় করে বলে রুহান। ওপর থেকে পড়া দেহটির মাথা সামনের কাঁচের ওপর দিয়ে ঝুলে গেছে। উন্মুক্ত গলায় মানুষের দাঁতের কামড়ের চিহ্নটা চোখ এড়ায়নি ওর।
সিলেটের গহীন বনে দীর্ঘদিন পর জ্ঞান ফিরে পাওয়া মানুষটা কে? কিয়াসু কেন সেই মানুষটার প্রতি এতো আগ্রহী? কিয়াসুর জীবনের অন্ধকার উপাখ্যান জানতে চান? ওদিকে রাজস্থানের যে ঘটনা ‘সত্য-কলামে’ ঠাই নিয়েছে, তা কি আদৌ ঘটেছিলো? কুড়িগ্রামের সীমান্ততঘেষা অঞ্চলে রাতের গভীরে নেমে আসা নিশিবু’র অভিশাপ কতোটা সত্যি? বরিশালের ঝালকাঠিতে প্রতি আমাবস্যার রাতে অজ্ঞাত আক্রমনের জন্য দায়ী কে? এর জন্য স্থানীয় মন্ত্রীর কেনো এতো মাথা ব্যথা? ওদিকে সাফওয়াত আর আইরিন সুন্দরবনের গভীরে এক চরে বন্দী। দূর থেকে ভেসে আসছে হিংস্র মায়াবাঘের হুংকার! কী করবে তারা? এমন অজস্র প্রশ্নকে পেছনে ফেলে সবার একটাই জিজ্ঞাসা। রফিক শিকদার কোথায়? ‘হার না মানা অন্ধকার’ জগতের দ্বিতীয় আখ্যান ‘ঘিরে থাকা অন্ধকার’, পাঠকদের আরেকবার নিয়ে যাবে প্রকৃতির সব অদ্ভুত আর ব্যাখ্যাতিত ঘটনার জগতে।
ছোট্ট এক মফস্বল শহর নিশ্চিন্তপুর। যে শহরে অপরাধ হয় না বললেই চলে। কিন্তু হলো একদিন। চুরি হলো এক প্রাক্তন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের শখের সাইকেল। ব্যস, শহরে মুখরোচক গল্পে পরিণত হলো ঘটনাটা! ভাবছেন, একটা সামান্য সাইকেল চুরির ঘটনায় এত মাতামাতি করার কি আছে? একই কথা ভেবেছিল নিশ্চিন্তপুরের সাহিত্যমনা একদল তরুণ-তরুণী। তারা বুঝল, মানুষ সত্যিকার বিনোদন পায় অপরাধের গল্প শুনে। কোথাও অপরাধ হলে মানুষ যতই মুখে মুখে ‘হায় হায়’ করুক না কেন, তাদের মনের একটা অংশ আনন্দ পায়। এই বিষয়টা উপলব্ধি করে তারা একটি বিনোদনমূলক পত্রিকা বের করল। নাম দিল ‘গল্প হলেও সত্যি’। কাল্পনিক কিন্তু গায়ে কাঁটা দেওয়া সব অপরাধের গল্প ছাপা হলো সেখানে। অপরাধ-বিহীন শহরে এমন একটি পত্রিকা বিক্রি হতে লাগল হট কেকের মতো। এরপর হঠাৎ কী এমন হলো, কোপেনহেগেন থেকে খ্যাতিমান বাঙালি সাইকোলজিস্ট জিব্রান আহমেদ ছুটে এলো নিশ্চিন্তপুরে? কী এমন ঘটল যে নিশ্চিন্তপুর থানার ওসি রুদ্র তালুকদার তার শান্ত শিষ্ট স্বভাব ছেড়ে রুদ্রমূর্তি ধারণ করল? একটা বিনোদনমূলক পত্রিকা কি করে নিশ্চিন্তপুরকে বদলে দিল চিরদিনের জন্যে? ছোট এই মফস্বলে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হতে লাগল অকল্পনীয়, অচিন্তনীয় সব রহস্য!
সুরক্ষিত পেন্থাউজে বাস করে সে, কারও সাতে-পাঁচে নেই। আপাতদৃষ্টিতে নিতান্তই গােগাবেচারা একজন। কঠোরভাবে মেনে চলে কয়েকটি অনুশাসন, অনুসরণ করে নিজস্ব কিছু নীতি। এর বাইরে তার যে পরিচয় সেটি খুব বেশি মানুষ জানে না। জীবন-মরণ সমস্যায় নিপতিত মানুষজন তার সাহায্য কামনা করে তাদের কাছে সে কেবলই একজন ‘নােহােয়ার ম্যান।’ প্রতিপক্ষের চেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকে সব সময়, অতিমাত্রায় সতর্ক একজন মানুষ। কঠোর প্রশিক্ষণ কাজে লাগায় অসহায় মানুষের পক্ষে। কিন্তু সর্বশেষ মিশনটি সবকিছু ওলটপালট করে দেয়, ছক থেকে বের হয়ে আসতে হয় তাকে। অনুশাসনের বলয় থেকেও সরে আসে ধীরে ধীরে। প্রতিপক্ষের সুচতুর চাল উন্মােচিত করে দিতে থাকে তার মুখােশ। তবে কি কেউ জেনে ফেলেছে তার গােপন পরিচয়টি? জীবনে প্রথমবারের মতাে কি ব্যর্থ হতে চলেছে ‘অরফান এক্স’? বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে নিলাে ইভান স্মােক। অন্ধের মতাে ঝাঁপ দিলাে অতল এক গহ্বরে-নাকি পেতে রাখা ফাঁদে? গ্রেগ হুরউইজের অসাধারণ সৃষ্টি ‘অরফান এক্স’ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলােচিত আর জনপ্রিয় একটি থৃলার। খুব শিঘ্রই হলিউড মুক্তি দিতে যাচ্ছে অরফান এক্স সিনেমাটি কিন্তু বাংলাভাষাভাষি পাঠককে আগেভাগেই এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে বাতিঘর প্রকাশনী।