সুবেদারের দায়িত্ব নিয়ে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র মুহম্মদ আজম শাহ বাংলায় এসেছিলো ৮ই জুন ১৬৭৮ সালে। শিতা আওরঙ্গজেব তার উপর ন্যস্ত করেছিলো তিন তিনটি দায়িত্ব। এক, মেহনতী বাংলার রায়তদের শোষণ রোধের প্রয়াস, দুই, স্বীয় স্বভর শায়েস্তা খান প্রশাসনের দুর্নীতি ও করের অর্থ তসরুণের অভিযোগের তদন্ত এবং তিন, সুদূরের চীন সীমান্ত পর্যন্ত মুঘল সাম্রাজ্য প্রসারিত করার প্রচেষ্টা। মাত্র পনেরো মাসের সফল প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে দাক্ষিণাত্যের বিদ্রোহ দমন করার সমন পেয়ে সে ঢাকা ছেড়ে চলে যায় অক্টোবর ১৬৭৯ সালে। সেই সময়কালের প্রেক্ষাপটে সতেরোশ' শতাব্দীর শাসিত বাঙালি সমাজের ক্রমবর্ধমান আত্মচেতনা, বাঙালি কবি ও শিল্পীর আত্মপরিচয় এবং সংগ্রামকে বিধৃত করছে এ উপন্যাস। উপন্যাসের বিবিধ চরিত্র কবি সৈয়দ জাফর, দেবদাসী নর্তকী রশমী, মসলিন শিল্পী মা আমেনা বেগম, পর্তুগিজ কুঠিয়ালের ঘরণী বাংলার মেয়ে মারিয়া, মসজিদের আত্মসন্ধানী ইমাম শামসুদ্দীন, জিঞ্জিরার মন্দিরের সংসারত্যাগী পূজারী, বাংলার চিরায়ত সমাজ জীবনের স্বাক্ষর ও প্রতীক। -ফখরুজ্জামান চৌধুরী