আতাতুর্ক এবং এরদোয়ান- দুটি বিপরীত আদর্শের মানুষ। দুই কিংবদন্তি। এই দুজন মানুষ তুরস্কের একশো বছর সময়কালের দুই প্রান্তে বসে ইতিহাস গড়েছেন। দুটি ভিন্ন ধারার, ভিন্ন চিন্তার ইতিহাস। একজন ছিলেন খিলাফত পরবর্তী তুরস্ককে চরম জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মহীন সমাজব্যবস্থা গড়ার কারিগর। আর অপরজন উদারপন্থী জাতীয়তাবাদ এবং ইসলামি মুল্যবোধ ফিরিয়ে আনার রূপকার। এই দুই কিংবদন্তির মধ্যখানে রয়েছে বহু উত্থান-পতনের গল্প। রয়েছে আদনান মেন্দেরেস এবং মিল্লিগুরুশের জনক নাজিমুদ্দিন আরবাকানের সংগ্রামী জীবনের গল্প। একশত বছর আগে যে বিশ্বাসী মানুষদের আশা ভঙ্গের সূচনা হয়েছিল, ঠিক তার একশত বছর পর নতুন করে বিশ্বাসের নির্মাণ শুরু হয়েছে। ষাট এবং নব্বইয়ের দশকে প্রত্যাশিত স্বপ্নের শুরু হলেও দ্রুতই তা কালো মেঘের আড়ালে চাপা পড়ে যায়। কিন্তু বিশ্বাসীদের স্বপ্ন তো শেষ হওয়ার নয়। কেবল দরকার ছিল একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নাবিকের। তাইতো কালো মেঘের ঘনঘটা কাটিয়ে নায়ক এরদোয়ানের হাত ধরে শুরু হয় মূল্যবোধ নির্মাণের পুনযাত্রা। উসমানি খেলাফতের উর্বরভূমি তুরস্ক- স্বভাবতই ইতিহাস সমৃদ্ধ। বিশেষ করে আতাতুর্কের হাত ধরে জন্ম নেওয়া সেক্যুলার তুরস্ক খিলাফতপ্রেমী মানুষদের যেন দীর্ঘশ্বাসের প্রতিচ্ছবি। বসফরাসের পানি যেন সেই মানুষদের অশ্রজিলে বয়ে চলা স্রোতধারা। আশাভঙ্গের ঠিক একশত বছর পরে বসফরাসের তীর নতুন স্বপ্নের হাতছানি দিচ্ছে ।
ইতিহাসের ছিন্নপত্র (১ম খণ্ড) (হার্ডকভার) - ঔপনিবেশিক শাসন থেকে আজাদী আন্দোলন ইতিহাস বিমুখতা ও রাষ্ট্র-নিয়ামকদের আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থের যুগল গ্রাসে ঘনিয়ে আসে যে গ্রহণ-আঁধার, তা থেকে মুক্তি পেতে ফিরে যেতে হয় অনুদ্ঘাটিত ইতিহাসের কাছে। পুনর্পাঠ অনিবার্য হয়ে ওঠে অতীতের বিতর্কিত প্রশ্নসমূহের খণ্ডিত আখ্যানের পরিপ্রেক্ষিতে। খুঁজে দেখতে হয় বিরোধের উৎস এবং কারণগুলোকে। এই সংকলনে লেখকের প্রত্যয়ী অনুসন্ধানে আলোকপাত করা হয়েছে তেমনই কিছু ঐতিহাসিক ঘটনায়। ইতিহাস বিনির্মাণের ধারায় এ নিঃসন্দেহে এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন।
ফিলিস্তিনের বুকে ইজরাইল (হার্ডকভার) - উদার ফিলিস্তিনে জায়োনিস্ট বিশ্বাসঘাতকতা ও দখলদারিত্বের পুর্বাপর ইতিহাস ধরণির বুকে ইহুদি জাতির শুরুটা হয়েছিল মহিমান্বিত মানুষের হাত ধরেই। ইউসুফ (আ.)-কে হত্যা প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাদের সাদা দেয়ালে প্রথম কালো দাগ লাগে। হিংসা ও ষড়যন্ত্রের শুরু সেখান থেকেই। উত্থান-পতনের নানান ইতিহাস পেরিয়ে ভাগ্য তাদের নিয়ে আসে ফিলিস্তিনের উর্বর ও সিগ্ধ প্রান্তরে। অবাধ্যতা ও বিশ্বাসঘাতকতা যাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, তারা কি নীরবে বসে থাকতে পারে? চলতে থাকে একের পর এক ঘৃণ্য কার্যক্রম। কর্মফল তাদের বিতাড়িত করে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভ‚মি থেকে; তবুও থেমে থাকে না ষড়যন্ত্রের চাকা। সভ্যতার চিরায়ত নিয়মে ফিলিস্তিনের মুতায়াল্লিয়াত চলে আসে বিশ্বাসীদের হাতে। প্রবাহিত হয় সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বারিধারা। কয়েক শতাব্দী পেরিয়ে সেখানে আবারও শুরু হয় নির্মম পৈশাচিকতা। আশ্রয়ীরা বনে যায় দখলদার হিংস্র দানবে, ভ‚লুণ্ঠিত হতে থাকে মানবতা। এর প্রতিক্রিয়ায় রচিত হতে থাকে হাজারো ত্যাগ ও সাহসের গল্প, লক্ষ প্রাণে যা এঁকে দেয় মুক্তির রক্তিম স্বপ্ন।
বিশ্রুত নগরী কনস্ট্যান্টিনোপল। মহানবি ﷺ-এর যুগে দুনিয়ার অন্যতম পরাশক্তি পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য বা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী। ‘একজন মহান সেনাপতির নেতৃত্বে এক উৎকৃষ্ট সেনাদলের হাতে সুবিখ্যাত নগরী কনস্ট্যান্টিনোপল মুসলিমদের করায়ত্ত হবে’-এমন সুসংবাদ দিয়েছিলেন মহানবি ﷺ। তাঁর সুসংবাদ বাস্তবায়নের গৌরব অর্জনে বহু সেনাপতি, খলিফা ও সুলতান কনস্ট্যান্টিনোপল জয়ের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সফল হননি। অবশেষে ১৪৫৩ সালে উসমানি সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মাদ কনস্ট্যান্টিনোপল জয় করে রাসূলুল্লাহর সুসংবাদ বাস্তবায়নকারী ‘আমির’ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। এই বইয়ে ইতিহাসের মোড় পরিবর্তনকারী ওই ঘটনার অনুপুঙ্খ বিবরণ উঠে এসেছে। তবে আলোচনার ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে আনাতোলিয়ায় উসমানি তুর্কিদের সালতানাত প্রতিষ্ঠার ইতিহাসও তুলে ধরা হয়েছে। ক্ষয়িষ্ণু বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের পতন এবং উদীয়মান অটোমান সালতানাতের উত্থানের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে। ঐতিহাসিক ঘটনাবলি পর্যালোচনা করা হয়েছে নির্মোহ দৃষ্টিতে। নিছক মৃত মানুষের কাহিনি সংকলন নয়; বরং ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির সূত্রগুলোকে এক সুতোয় গাঁথার চেষ্টা করা হয়েছে এই গ্রন্থে।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির মাত্র পাঁচ বছর পর বিশ্বকাপজয়ী ক্যাপ্টেন ইমরান খানের জন্ম। পাকিস্তানের ইতিহাসের সাথেই তাঁর জীবন আবর্তিত হয়েছে। অর্থ ও ক্ষমতার মোহে অন্ধ অভিজাত শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক অবদমিত পাকিস্তান বর্তমান বিশ্বের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর মুসলিম দেশ। তবুও সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আর বর্তমান মিত্র আমেরিকার নিয়মিত বোমা হামলা থেকে নিজ জনগণকে রক্ষা করতে অক্ষম। ‘পাকিস্তান ব্যর্থ রাষ্ট্র’-এ ধারণা দিনদিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। কীভাবে পাকিস্তান অবিচার ও অস্তিতিশীলতার শেষ প্রান্তে এমন এক বিপর্যয়কর পরিণতিতে পৌঁছাল? ইমরান খান তাঁর আপন স্মৃতি-প্রিজমে প্রতিসরিত আলোয় দেখা ইতিহাস বর্ণনা করেছেন অনুপম ভঙ্গিমায়। শুরু করেছেন পতনোন্মুখ ব্রিটিশ রাজের সময়কালে রচিত দেশের বুনিয়াদি ধারণা থেকে। মুসলিম বিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া বিভিন্ন মন্তব্য তুলে ধরেছেন। তিনি ঐতিহাসিক ঘটনাবলিকে পাশ্চাত্যের চোখ দিয়ে দেখার পাশাপাশি সাধারণ পাকিস্তানিদের দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখেছেন। পাকিস্তান : আমার ইতিহাস বইয়ে পাশ্চাত্যের কাছে অপরিচিত ভিন্ন এক পাকিস্তানকে তুলে ধরেছেন ইমরান খান। ইতহিাসের এই বুনন থেকে আমরা ইমরানের ব্যক্তিগত জীবন, লাহোরের স্মৃতিময় শৈশব, অক্সফোর্ড-এর শিক্ষাজীবন ও অসাধারণ ক্রিকেট ক্যারিয়ার, জেমিমা গোল্ডস্মিথের সঙ্গে বিয়ে, তাঁর জীবনে মায়ের প্রভাব আর ইসলামি বিশ্বাস সম্পর্কে জানতে পারব। এই গ্রন্থে আমরা ইমরানের চোখে আল্লামা ইকবালকে দেখব। পরিশিষ্ট অংশে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সর্বশেষ আপডেট জানব।
মুসলিম মস্তিষ্ক (হার্ডকভার): বিজ্ঞানের অনবদ্য গল্প পপুলার কালচারে আমরা ‘অন্ধকার যুগ’ কথাটার সাথে অনেক পরিচিত। সাইন্স, টেকনোলজি, ফিলোসফির জন্য ইতিহাসে এক কালো গহ্বর। আবার অন্যদিকে বিভিন্ন মুসলিম দাওয়াহ সংগঠনকে প্রচার করতে শুনি-এটা ইউরোপিয়ানদের জন্য অন্ধকার সময়কাল, আর মুসলিম বিশ্বে তো চলছিল এক স্বর্ণযুগ। আর এখন অনেক পপুলার মাধ্যমে এই কথাটাও প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেছে। তাহলে অন্ধকার যুগ ন্যারেটিভের বাস্তবতা কতটুকু? স্বর্ণযুগ ন্যারেটিভও-বা কতটুকু সত্য? বইটির গল্পগুলোর মধ্যে দিয়ে সেসবেই আলো ফেলার প্রচেষ্টা...