ওজের জাদুকর ক্যানসাসের দিগন্তজোড়া রুক্ষ তৃণপ্রান্তরের বুকে বাস করে ছোট্ট মেয়ে ডরোথি। ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় একদিন তাকে উড়িয়ে নিয়ে গেল দূরে, বহুদূরে–ধূসর বাস্তব থেকে কল্পনার বহুবর্ণ বিচিত্র জগতে। বাড়ি ফেরার কোন উপায় তার জানা নেই। সাহায্য করতে পারে শুধু একজন–মহাশক্তিমান ভয়াল ওজ। হলদে ইটের রাস্তা ধরে শত বাধা-বিঘœ পেরিয়ে যেতে হবে তারই কাছে। শুরু হলো তার আশ্চর্য অভিযান। হোয়াইট ফ্যাং হোয়াইট ফ্যাং। সুমেরুর এক অদ্ভুত কুকুর। না কুকুর, না নেকড়ে। কারণ, মা তার কুকুর হলেও বাপ ছিল জাত নেকড়ে। জন্মসূত্রে প্রাপ্ত মিশ্র-স্বভাব তাকে করে তুলেছে বদমেজাজী, নিঃসঙ্গ, হিংস্র। কিন্তু ভয়াবহ এই হিংস্রতার মাঝেও যে মানুষটিকে ভাল লেগে যায় তার জন্যে প্রাণ দিতেও কুণ্ঠা নেই। আ কানেক্টিকাট ইয়াংকী ইন কিং আর্থারস কোর্ট ঊনবিংশ শতাব্দীতে মাথায় শাবলের বাড়ি খেয়ে হ্যাঙ্ক মর্গানের জ্ঞান ফিরল রাজা আর্থারের ইংল্যান্ডে। কানেক্টিকাট ইয়াংকী, অর্থাৎ হ্যাঙ্ক মর্গান, তার সমস্ত বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যবহার করে রাজার প্রধানমন্ত্রী বনে গেল, বুদ্ধির খেলায় হার মানাল ঝানু জাদুকর মার্লিনকে, এবং শেষ পর্যন্ত জয় করে নিল রাজ্য? কিন্তু কানেক্টিকাটে আর কোনদিন ফেরা হবে কি তার?
জেন্ডার বন্দি স্যার অ্যান্টনি হোপ হকিন্স ১৮৯৪ সালে লেখেন ‘দ্য প্রিজনার অভ জেন্ডার। প্রকাশের সাথে সাথে বইটি এত জনপ্রিয় হয় যে তিনি আইন ব্যবসা ছেড়ে লেখাকেই পেশা হিসেবে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন রুরিতানিয়া নামে কল্পিত এক দেশে রুডলফ র্যাসেনডিল নামের এক যুবকের রোমান্টিক অভিযানের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে এ বইটিতে। ব্ল্যাক হার্ট অ্যান্ড হোয়াইট হার্ট নিজের অর্জনক্ষমতার মধ্যে রয়েছে, এমন কোনকিছুর জন্যে বাসনা হলে তা থেকে ফিলিপ হ্যাডেন নিজেকে কখনও বঞ্চিত করেনি। শ্বেতাঙ্গ হ্যাডেন কেন দেশান্তরী হয়ে আফ্রিকার নাটালে এসেছিল তা কেউ জানে না। আইনের হাত এড়ানোর জন্যে একদিন সে সেখান থেকে বণিকের বেশে সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়ল জুলুল্যান্ডে। রাজা সেটি ওয়েইয়ো-র কাছে তাঁর দেশে শিকারের অনুমতি চাইতে গিয়ে কঠিনএকসমস্যার ফাঁদে পা দিয়ে বসল। পালাতে হবে তাকে, যে-করেই হোক। এক টুকরো স্বর্গ পৃথিবীর অন্যতম এক নির্জন স্থানে বাসা বেঁধেছে এক মানব আর এক মানবী। সোনালি সীল খুঁজে চলেছে তারা মরিয়ার মত। পেল কি? এদিকে ওদের এক টুকরো স্বর্গে হানা দিয়েছে বিষধর সাপ। তারপর?
এরিক ব্রাইটিজ সলোমনের গুপ্তধন, শী, রিটার্ন অভ শী, অ্যালান কোয়াটারমেইন ইত্যাদি অতুলনীয় কাহিনি যাঁর হাত দিয়ে বেরিয়েছে, সেই হেনরী রাইডার হ্যাগার্ডের আর একটি চমৎকার শ্বাসরুদ্ধকর কাহিনি এরিক ব্রাইটিজ। দ্য প্লেগ ফরাসী বন্দর ওরাওঁ। ১৯৪- সাল। ১৬ এপ্রিল। ডাক্তার রিও বাসা থেকে বেরোতে গিয়ে সিঁড়িতে একটা মরা ইঁদুর দেখতে পেল। এই হলো শুরু। একজন-দুজন করে মরতে শুরু করল মানুষ। আতঙ্কে কুঁকড়ে গেল শহরবাসী। কর্তৃপক্ষ একে প্লেগ বলে স্বীকার করল না। বাড়তে লাগল সংক্রমণ, দলে দলে মরতে লাগল মানুষ। এমনি সময়ে বন্ধ হয়ে গেল শহরের সবগুলো ফটক। তারপর? আমি গুপ্তচর উনিশশো চোদ্দ সালের দোসরা আগস্ট। বেলজিয়াম আক্রমণ করল জার্মানরা, দখল করে নিল পুরো দেশটা। মিষ্টি মেয়ে মার্থা নোকার্ট। ঘরছাড়া হলো পরিবারের সবার সাথে । কাজ নিল সে হাসপাতালে, নার্সের। একদিন চুপিচুপি এল পারিবারিক বন্ধু লাসেল। বুকের মধ্যে কাঁপন ধরিয়ে দিল ওর কথাগুলো: ‘মার্থা, তুমি তো বুদ্ধিমতী মেয়ে। দেশের জন্যে কিছুই কি করার নেই তোমার?’ বদলে গেল মার্থা নোকার্ট । শুরু হলো ওর স্পাই-জীবন। গল্পের চেয়েও শ্বাসরুদ্ধকর সত্য ঘটনা।
গ্রেট এক্সপেকটেশানস গ্রামের কিশোর পিপ। আকস্মিকভাবে অসীম সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেল ওর সামনে, অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি তার সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিতে চাইল তার নামে; শর্ত একটাই: ভদ্রলোক হতে হবে পিপকে। লণ্ডনে চলে এল পিপ। ঘনিষ্ঠতা হলো অপরূপা এস্টেলার সাথে। অবশেষে পিপ জানতে পারল তার সম্পত্তিদাতার পরিচয়। যে সম্ভাবনার সৌধ সে গড়েছিল মনে মনে, এক নিমিষে ধূলিসাৎ হয়ে গেল তা। ডেভিড কপারফিল্ড ডেভিড কপারফিল্ড। চার্লস ডিকেন্স-এর অমর সৃষ্টি। জন্মের আগেই পিতৃহারা মা-কে হারায় মাত্র দশ বছর বয়সে। অসহায় শিকার হয় নিষ্ঠুর সৎ-বাবার অত্যাচারের। চরম দুঃখ-কষ্টের মধ্যে কাটে তার শৈশব। তবু সে হার না মেনে লড়তে থাকে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভের জন্য। সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে কীভাবে সে উপনীত হবে পূর্ণ সুখ ও শান্তির সোনালী মঞ্জিলে? দ্য জাঙ্গল বুকস্ ঝোপের মাঝে লুকিয়ে বসে আছে কালো একটা ন্যাংটো ছেলে। এখনও ভালভাবে হাঁটাই শেখেনি সে। যে নেকড়ে-মা তাকে লালন করছে সে তার নাম দিয়েছে-মৌলি। বলেছে, জঙ্গলে থাকতে হলে জঙ্গলের আইন মেনে চলতে হবে। ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে মৌগলি। তাকে খাওয়ার জন্যে ঘুর-ঘুর করে ক্ষুধার্ত বাঘ। কিন্তু শক্ত পাহারা দিয়ে রাখে অন্যান্য জন্তুরা। অপূর্ব একটি বই।