আমার অগ্রজের ৮০তম শুভ জন্মদিনের স্মারক সংখ্যার জন্য সম্পাদকীয় লিখতে গিয়ে আমি যুগপৎ আনন্দিত ও গর্বিত। আনন্দ এই জন্য যে তাঁর মতো বিশাল ব্যক্তিত্বের শুভ জন্মদিনে কিছু লিখতে পারার সুযোগ এক বিরল সম্মান। আবার একই সঙ্গে যাঁরা তাঁর ভুবনের বাসিন্দা-দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের লেখায় সমৃদ্ধ স্মারক সংখ্যা- তাঁদের কাছে এই সম্পূর্ণ অজানা ও অখ্যাত ব্যক্তির লেখা সম্পাদকীয় বিলক্ষণ হাস্যরসের সঞ্চার করতে পারে। তবে এটা ঠিক যে এ ধরনের প্রকাশনায় সম্পাদকীয় থাকাটা একান্তই যুক্তিযুক্ত বলে বিবেচনা করা যায়। আমার অগ্রজ অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী শুধু একজন ব্যক্তি নন, তাঁকে একটি প্রতিষ্ঠান বললে বোধহয় অত্যুক্তি হবে না। একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষাবিদ, লব্ধপ্রতিষ্ঠ কবি, উচ্চমানের প্রাবন্ধিক, প্রসিদ্ধ কলাম লেখক, অতি উন্নতমানের সমাজ সচেতন এবং সর্বোপরি সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব- সবকিছু এক করলেও তাঁর পরিচয় অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আমার সহজ চিন্তায় তাঁকে সজ্জন, অজাতশত্রু, দেশপ্রেমিক এবং স্বীকৃত অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি ছাড়াও একজন আদর্শ পুত্র, যোগ্য স্বামী, স্নেহপ্রবণ ভ্রাতা, দায়িত্ববান পিতা ও অত্যন্ত আদরের পিতামহ-এককথায় একজন পরিপূর্ণ ব্যক্তি নির্দ্বিধায় বলা যায়। আমাদের জীবিত আট ভাইবোনের মধ্যে (ছয় বোন ও দুই ভাই) সর্বজ্যেষ্ঠ হিসেবে তিনি আমাদের সবার শ্রদ্ধার পাত্র। আমাদের পিতামাতার মৃত্যুর পর এখন তিনিই আমাদের সবার মুরুব্বি। আমাদের পারিবারিক অনুষ্ঠানগুলোতে আমার অগ্রজই মধ্যমণি। তাঁকে কেন্দ্র করেই আমাদের পারিবারিক বিষয়াদি ও সুখ-দুঃখ সব কিছু আবর্তিত হয়। আমাদের পিতামাতার মৃত্যু দিবসে এ যাবৎকালে পারিবারিক পুনর্মিলনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। এসব অনুষ্ঠানের সর্বোচ্চ আকর্ষণ-ই হচ্ছে তাঁর গৌরবময় উপস্থিতি। এ ধরনের অনুষ্ঠানশেষে আমরা সবাই অধীর অপেক্ষায় থাকি পরবর্তী অনুষ্ঠানের জন্য। সম্পাদকীয় লিখতে গিয়ে পারিবারিক বিষয়গুলো বেশি প্রাধান্য পেয়ে যাচ্ছে, এটা বুঝতে পারছি। কিন্তু পুরো বিষয়টাই যেহেতু তাঁকে কেন্দ্র করে, পাঠক আমার প্রগল্ভতা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন- এটাই আমার প্রত্যাশা। যাঁরা তাঁদের লেখা দিয়ে এই স্মারক সংখ্যা অলংকৃত করেছেন তাঁদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আমার সবচেয়ে বড়ো আনন্দ যে যাঁর কাছেই অনুরোধ করেছি আমার অগ্রজের উপর একটা লেখা দেয়ার জন্য, কেউ আমাকে বিমুখ করেননি। প্রায় প্রতিটি লেখাই এসেছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। এসব লেখার উপর আমার মন্তব্য একেবারেই নিষ্প্রয়োজন, কারণ আমি কোনো লেখাই আগে পড়িনি। পাঠক যদি লেখাগুলো পড়ে আনন্দ পান তার একটি অংশের দাবিদার নিশ্চয় আমি। এই স্মারক সংখ্যা প্রকাশ করতে যিনি আমাকে উৎসাহিত করেছেন বিশিষ্ট আলোকচিত্র শিল্পী ও পরিবেশবিদ এম. এ তাহের-এর কাছে আমি বিশেষভাবে ঋণী। [13:29, 5/14/2024] Taifur Rahman Talash: এই স্মারক গ্রন্থের প্রকাশক ঐতিহ্য প্রকাশনীর কর্ণধার জনাব আরিফুর রহমান নাইম ও মিউচ্যুয়াল গ্রাফিক্স-এর পরিচালক শ্রী মানবেন্দ্র সুর-এর কাছেও আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। গ্রীণ ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জনাব নাসির এ চৌধুরী ও টেকনো টেক্সটাইল, স্পিনিং ও কমার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সৈয়দ মনজুরুল হকের সহযোগিতাও কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। আমি জানি এ স্মারকে যাঁদের লেখা ছাপা হল তাঁরা ছাড়াও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি ও লেখক যাঁরা আমার অগ্রজের উপর লিখতে আগ্রহী ছিলেন, আমাকে দোষারোপ করবেন। কারণ তাঁদের কাছে আমি যেতে পারিনি। কিংবা অনুরোধ করতে পারিনি এই অনুষ্ঠানে তাঁদের উপস্থিতির জন্য। এজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। পরবর্তীতে যদি কখনো সুযোগ আসে তাঁদের দুয়ারে আমি ভিক্ষা নিতে যাব। আমার অগ্রজ অধ্যাপক: জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর ৮০তম জন্মদিনে একটি সংকলন বের করেছিলাম। পুস্তকটির পুরো সংখ্যাগুলি শেষ হয়ে গেলে অনেক অনুরোধ আসতে থাকে পুন: মুদ্রণের জন্য। এ সংখ্যাটি তাঁর ৮৫তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশনা করা হচ্ছে। প্রথম সংখ্যার কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি এই সংখ্যায় শুদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছে। তা ছাড়া কিছু নতুন ছবিও সংযোজন করা হয়েছে। অনুজ প্রতিম এম. এ তাহের ব্যাতিরেকে এ সংখ্যাটি পুন: মুদ্রণ সম্ভব ছিলনা। তাঁকে ধন্যবাদ দিলে সব কিছু দেওয়া হয় না। তাই আনুষ্ঠানিকতা পরিহার করলাম। এ সংখ্যাটি ছাপাতে আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন জনাব নাসির চৌধুরী ও তাঁর সংস্থা গ্রীনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স এর আর্থিক সহায়তা ও পরামর্শ এ সংকলনটিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। আমি জনাব নাসির চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞ। বইটি সুধি সমাজে গৃহীত হলে আনন্দ ও গৌরব বোধ করব। এ.কিউ. সিদ্দিকী